Thursday, May 29, 2025

শিশু তামিমের শরীরে ছিল শত শত গুলি। ( BDC CRIME NEWS24)

 BDC CRIME NEWS24

শিশু তামিমের শরীরে ছিল শত শত গুলিঃ

প্রকাশ : ২৯ মে ২০২৫, ০৯: ৩১

 


বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গাজীপুরের রাজপথও রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। গত বছরের ৪ আগস্ট ছিল আরো বিভীষিকাময়। ছাত্র-জনতার মিছিল দমাতে নির্বিচার গুলি চালায় পুলিশ। রাস্তাজুড়ে ছিল লাশের সারি।

এ দৃশ্য ফেসবুকে দেখে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে সুনামগঞ্জের ছাতকের ১২ বছরের তামিম মাহমুদ। ঝাঁপিয়ে পড়ে মিছিলে, দুঃসাহসিক শিশুটি দাঁড়িয়েছিল মিছিলের সম্মুখভাগে। তার রক্তে ভেসে যায় রাজপথ।

পুলিশের গুলিতে মিছিল ছত্রভঙ্গ হলেও তামিম পিছু হটেনি। একাই ইট ছুড়ে জবাব দেয়। প্রতিক্রিয়ায় পুলিশ তাকেই লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তার মাথায় বিদ্ধ হয় ১৭৭টি গুলি, চোখের ভেতর ঢুকে ৯টি আর সারা শরীরে বিঁধে যায় আরো শতাধিক গুলি। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রক্তাক্ত শিশুটি।

জানা গেছে, তামিমের ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। আর দেখতে পায় না অপর চোখে। রঙিন দুনিয়া এখন তার দৃষ্টিতে অন্ধকার। এখনো বিভীষিকার মধ্যে আছে শিশুটি।

তামিম উপজেলার সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের দিগলি উত্তরচাকল গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে। শিশুটি গোবিন্দগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।

তামিমের পরিবার জানায়, সেদিনের সহিংসতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য মানুষ নিহত ও আহত হয়। সামাজিক মাধ্যমে শহীদ পরিবারের আহাজারি দেখে বিচলিত হয় তামিম। বাবা-মাকে কিছু না জানিয়ে বেরিয়ে পড়ে সে। গাজীপুরের বাঘের বাজার মেম্বার বাড়ি থেকে মিছিলটি হোতাপাড়ার দিকে অগ্রসর হলে পুলিশের গুলিতে তা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। একা থেকে যায় তামিম—কিন্তু সাহস হারায় না। সে রুখে দিতে চায় অন্যায়কে।

একজন ভ্যানচালক তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় চিনে ফেলে ও বাবাকে ফোন করে খবর দেয়। বাবা এসে প্রথমে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন হাসপাতালে এবং পরে রাত ২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখান থেকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে রেফার করা হয়। বর্তমানে তামিম সিএমএইচের অধীনে চিকিৎসাধীন।

নুর উদ্দিন বলেন, ‘আমার পরিবারে পাঁচ সদস্য। গাজীপুরের একটি গাড়ির শোরুমে চাকরি করতাম, সামান্য বেতনের সেই চাকরিটাও এখন নেই। চিকিৎসার পেছনে বহু টাকা খরচ করতে হয়েছে, এর সবটুকুই চড়াসুদে ঋণ নেওয়া। জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন এক লাখ টাকা দিয়েছে। এ ছাড়া কিছু মানুষের সহায়তা দিয়েছেন। এখন আমি বেকার। একটি চাকরি হলে কর্ম করে সংসারের চাকায় গতি ফেরাতে পারতাম। একই সঙ্গে ছেলের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন। প্রয়োজন।

শিশুটির পরিবার জানায়, চিকিৎসক বলেছেন, তামিমের একটি চোখ উপড়ে ফেলতে হবে। তার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। শিশুটি চেয়েছিল দেশের জন্য কিছু করতে আর এখন নিজেই অন্ধকারে। তার দিকে তাকানো যায় না। তার কথা মনে পড়লেই চোখের পানি থামে না। তার দৃষ্টি যারা কেড়ে নিয়েছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে।

আহত তামিম জানায়, ‘দেশকে ভালোবাসি। দেশের জন্য চোখ হারিয়েছি। মাথায় এখনো ১৭৭টি গুলি আছে। মুখে গুলি লাগার পর শক্ত কিছু খেতে পারি না। যন্ত্রণায় ছটফট করি। চাই চিকিৎসা, চাই পুনর্বাসন। আবার ডাক এলে দেশের জন্য লড়ব। এই দেশটা আমার, আমি দেশটাকে খুব ভালোবাসি।’

সূত্রঃ আমার দেশ

No comments:

Post a Comment

এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক: প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২৭ বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের অভ্যন্তরে ২০০৯ ...