Saturday, May 31, 2025

বুলেটের ক্ষত নিয়ে বিছানায় পড়ে আছেন কামিল। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

বুলেটের ক্ষত নিয়ে বিছানায় পড়ে আছেন কামিল:

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫, ১০: ২৩

গণঅভ্যুত্থানের সময় সিলেটের গোলাপগঞ্জে আন্দোলনে নেমে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে আহত হন জকিগঞ্জের কামিল আহমদ। পেশায় তিনি গাড়ি চালক। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে কাজকর্ম করার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। গুলির ক্ষত আর যন্ত্রণা নিয়ে ওই যুবক বিছানায় পড়ে থাকলেও কেউ খোঁজখবর নিচ্ছেন না। অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হওয়ায় পরিবারের লোকজন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। সরকারি গেজেটেও হয়নি তার স্থান। ফলে সব সুযোগ-সুবিধা থেকে রয়েছেন বঞ্চিত।

দুর্ভাগা ওই জুলাই যোদ্ধা জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল ইউপির খিলগ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। তিন ভাই আর দুই বোনের মধ্যে কামিল দ্বিতীয়। টানাপোড়েনের সংসারে তিনি ছিলেন অর্থের অন্যতম জোগানদাতা। খরচ জুটাতেন গাড়ি চালিয়ে। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনে অংশ নিয়ে রাবার বুলেটে বিদ্ধ হয়ে এখন সুচিকিৎসা ছাড়াই বাড়িতে চরম কষ্টে দিন পার করছেন।

জানা গেছে, আন্দোলনে শুরু থেকেই সক্রিয় ছিলেন গাড়ি চালক কামিল আহমদ। ৪ আগস্ট বিকেলে গোলাপগঞ্জে যান কামিল। সেখানে পৌঁছার পর দেখতে পান ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে। তখন তিনিও ছাত্র-জনতার সঙ্গে লাঠি হাতে নিয়ে রাজপথে প্রতিরোধে অংশ নেন। একপর্যায়ে পুলিশ ছাত্র-জনতা দিকে গুলি ছুড়লে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসকরা দায়সারাভাবে তার শরীর থেকে ১৬টি রাবার বুলেটের কিছু অংশবিশেষ বের করে ভয়ভীতি দেখিয়ে উন্নত চিকিৎসা ছাড়াই বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। তখন গ্রেপ্তার আতঙ্কে আহত কামিল উন্নত চিকিৎসার জন্য জোর করেননি। পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে বাড়িতে চলে আসেন। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কামিল সুচিকিৎসার আশা নিয়ে আবারও চিকিৎসকের কাছে যান। তখন চিকিৎসকরা জানান, অপারেশন করে রাবার বুলেটের অংশ শরীর থেকে বের করতে হবে। অপারেশন ছাড়া পুরোপুরি সুস্থ হতে পারবেন না। তাতে বড় অঙ্কের টাকা লাগবে। তখন কামিলের পরিবারের লোকজন ধার-দেনা করে কয়েকদিন তার চিকিৎসা খরচ চালিয়ে যান। কিন্তু টাকার অভাবে অপারেশন করানো সম্ভব হয়নি।

কামিল বলেন, শরীরে রাবার বুলেটের কিছু অংশ এখনো রয়ে গেছে। অসহ্য যন্ত্রণায় খুব কষ্ট পাচ্ছি। প্রচণ্ড ব্যথায় ভালোভাবে ঘুমাতে পারি না। চোখ দিয়ে অবিরাম পানি ঝরছে। গাড়ি চালাতে পারি না। আত্মীয়স্বজনের সাহায্যে চলছে পরিবার। ১৬টি রাবার বুলেটে আহত হয়ে যন্ত্রণায় দিন কাটালেও সরকারি সহযোগিতা কিংবা গেজেটে আমার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি। অথচ আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত থাকার একাধিক প্রমাণ রয়েছে। তবুও সরকারি সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হলাম। অনেকদিন চলে গেলেও এ পর্যন্ত কেউই আমার খোঁজখবরও নেয়নি। আমার প্রতি এটা মারাত্মক অন্যায় করা হয়েছে।

কামিলের বাবা আব্দুর রহিম জানান, আমার ছেলে সুচিকিৎসার অভাবে তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে গণঅভ্যুত্থানের ৯ মাস পরও ছটফট করছে। ছেলেটা আহত হওয়ার পর থেকে গাড়ি চালানোর সক্ষমতা হারিয়ে বাড়িতে শুয়ে থাকে। যন্ত্রণা শুরু হলে চিৎকার করে কান্নাকাটি করে। কিছু টাকা-পয়সা ছিল তা দিয়ে যতটুকু সম্ভব চিকিৎসা করিয়েছি। আমার পরিবারের অর্থের অন্যতম জোগানদাতা ছেলের সুচিকিৎসা নিশ্চিত ও আহতদের সরকারি গেজেটে নাম সংযুক্ত করতে সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।

কামিলের মা বেদানা বেগম বলেন, ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে আমার ছেলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে। শরীরজুড়ে রয়েছে ক্ষতচিহ্ন। ডাক্তার বলেছে এসব গুলি বের করতে অপারেশন লাগবে। কিন্তু সে টাকা তো আমাদের হাতে নেই। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান কামিলকে দ্রুত জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করার পরামর্শ দেন।

সূত্র: আমার দেশ 

No comments:

Post a Comment

এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক: প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২৭ বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের অভ্যন্তরে ২০০৯ ...