BDC CRIME NEWS24
আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে সেলিমকে:
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৫, ০৯: ২০
বগুড়ার কাহালু উপজেলার মুরাইল এলাকায় অবস্থিত লাইট হাউস উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন শহীদ সেলিম হোসেন। জন্ম বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পিরব ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পালিকান্দা গ্রামে।
অভাব-অনটনের মধ্যে বেড়ে ওঠা সেলিম কৃষক সেকেন্দার আলি ও মনোয়ারা বেগম দম্পতির বড় সন্তান। জুলাই আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট দুপুরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পরিকল্পিত হামলায় শহীদ হন তিনি।
জানা যায়, ভাইদের নিয়ে জুলাই আন্দোলনে যোগ দেন সেলিম। ৪ আগস্ট বগুড়ার সাতমাথার কাছে ডাকবাংলোর ভেতরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে তাকে।
শহীদ সেলিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার মা ছেলের ছবি বুকে নিয়ে কান্না করছেন। পাশে ছোট ছেলে আয়নাল মাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। অভাবের তাড়নায় তার বাবা একটি মুদি দোকান দিয়েছেন।
সেলিমের বাবা সেকেন্দার আলি বলেন, আমার বয়স হয়েছে। জমিতে আর আগের মতো কাজ করতে পারি না। সংসারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল সেলিম। তার আয়ে মোটামুটিভাবে দিন কাটছিল। এখন তাকে হারানোর পর সংসার চালাতে মুদি দোকান দিয়েছি।
মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘হাসিনার লীগ বাহিনী হামার ছেলেকে কুপিয়ে খুন করিচে। খুনি হাসিনা যেন আর কখনোই বাংলাদেশে আসপের (আসতে) না পারে। হামার বুক খালি করে দিচে। হামার সন্তানের খুনের বিচার শেষে হাসিনার যেন ফাঁসি হয়। হামি ওর (হাসিনার) ফাঁসি দেখে মরবের চাই। হামার সন্তান হারানোর যে ক্ষতি তা কোটি টাকা দিয়েও পূরণ করা সম্ভব লয়। হামার সন্তান নিজের জীবন দিয়ে বাংলাদেশ পুনরায় স্বাধীন করিচে।’
শহিদ সেলিমের ছোট ভাই উজ্জ্বল হোসেন বলেন, আমরা চার ভাই। সেলিম ভাই ছিলেন বড়। জুলাই আন্দোলনে তিনি প্রথম থেকেই অংশ নিয়েছিলেন এবং আমাদেরও অংশ নিতে উৎসাহিত করেছেন। আমরা তিন ভাইও আন্দোলনে অংশ নিই। ৪ আগস্ট আমি টিয়ারগ্যাসে আহত হলে দুপুরে বাড়িতে চলে আসি। এর কিছুক্ষণ পরই আমরা খবর পাই বগুড়ার সাতমাথার কাছে ডাকবাংলোর ভেতরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ছেলেরা আমার ভাইকে কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেছে। সেখান থেকে ছাত্ররা তাকে উদ্ধার করে শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই তিনি শহীদ হন। ৫ আগস্ট যখন দেশ স্বাধীন হয়, তখন আমরা বড় ভাইকে জানাজা শেষে দাফন করছিলাম। এখন আমি কোচিং ও প্রাইভেট পড়িয়ে কোনোরকমে সংসার চালাচ্ছি। একটা সরকারি চাকরি পেলে সংসার চালাতে অনেক সুবিধা হতো।
শহীদের ছোট ভাই আইনাল হোসেন জানান, সেলিম ভাইকে হত্যার ঘটনায় বাবা মামলা করেছেন। এখন আসামিরা জামিনে ছাড়া পেয়ে আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। সঠিক বিচার পাওয়া তো দূরের কথা আমাদের পরিবারের সদস্যরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আমি বগুড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সূত্র: আমার দেশ

No comments:
Post a Comment