Saturday, May 17, 2025

আ. লীগ সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান সাইদুল। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

আ. লীগ সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান সাইদুল:

প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৫, ০৮: ৩১

জুলাই বিপ্লবে ফেনীতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে শহীদ হন সাইদুল ইসলাম শাহী। সন্ত্রাসীদের তিনটি গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় শহীদ সাইদুলের শরীর। অন্য একটি গুলি এসে লাগে কানের নিচে।

গত বছরের ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহত হন সাইদুল।

ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন সাইদুল। রফিকুল ইসলাম ও রেহানা বেগম দম্পতির ছেলে সাইদুলের বয়স ছিল ২১ বছর। পরিবারের তিন ছেলের মধ্যে সাইদুল দ্বিতীয়।

বাবার ইচ্ছা ছিল ছেলেকে চিকিৎসক বানাবেন। ‘বড় ডাক্তার হয়ে’ মানুষের সেবা করবেন তিনি। কিন্তু বাবার সেই স্বপ্ন অপূর্ণ রেখেই ফ্যাসিবাদের বুলেটে শহীদ হন।

আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে মহিপাল সার্কিট হাউস রোডে পড়ে থাকে সাইদুলের নিথর দেহ। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই শহীদ হন সাইদুল।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সে দিন আন্দোলনে যাওয়ার সময় মায়ের কাছ থেকে ২৫ টাকা নিয়ে ফেনীতে আসেন সাইদুল। আসার সময় মাকে বলেন, ‘এবার শেখ হাসিনা সরকারের পতন না হলে আর কখনোই হবে না। প্রয়োজনে মা তোমাকেও আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছেলের সাহসিকতার জন্য গর্ব হয় বলে জানান মা রেহানা বেগম। তিনি বলেন, ‘আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়াতে তাকে ঠিকভাবে টাকা দিতে পারিনি কোনোদিন। ৪ আগস্ট ঘর থেকে বের হওয়ার আগে ২৫ টাকা চেয়েছিল সাইদুল। বলছিল তার কাছে ২৫ টাকা আছে, আরো ২৫ টাকা হলে ফেনী গিয়ে ফিরে আসতে পারবে।’

রেহানা বেগম বলেন, ‘ধার-দেনা করে ছেলেদের পড়াশোনা করিয়েছি। অনেক স্বপ্ন ছিল সাইদুলকে নিয়ে। কিন্তু সন্ত্রাসীরা তা পূরণ হতে দেয়নি। আমার ছেলেকে গুলি করে মেরে ফেলল। আমি এ হত্যার বিচার চাই।’

বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গাড়ি চালানোর আয় থেকে আমি সংসার চালাতাম। বড় ছেলে মাত্র কাজ শুরু করেছিল। আমার তিন সন্তানের মধ্যে সাইদুল বেশি মেধাবী ছিল। ইচ্ছা ছিল ছেলেকে ডাক্তার বানাব। কিন্তু আমার ছেলে দেশের জন্য শহীদ হয়েছে, আমার সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি।’

২০২৩ সালে চট্টগ্রামের বারৈয়ারহাট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল সাইদুলের। তবে অভাবের তাড়নায় ওই সময় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। ২০২৪ সালে আবার পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলেও দিতে পারেননি। এর আগে ২০২১ সালে নিজ ইউনিয়নের ফাজিলপুর ডব্লিউ-বি কাদরী উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হন এই বীর শহীদ।

বড় ভাই সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই ছিল আমাদের সবার থেকে আলাদা। কথাবার্তা কম বলত, মনের মধ্যে দেশের জন্য ভালোবাসা ছিল। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাকে চারটি গুলি করে মেরে ফেলল।’

সাইদুলের বাল্যবন্ধু নিশাদুল ইসলাম সৌরভ বলেন, ‘তার সঙ্গে আমার শেষ কথা হয় ৪ আগস্ট সকালে। দেশের প্রতি সাইদুলের অনেক ভালোবাসা ছিল। দেশের নানা অন্যায়-দুর্নীতি নিয়ে সে সব সময় সরব ছিল । খেলাধুলায় ছিল তার প্রবল আগ্রহ। চট্টগ্রামে বিভাগীয় পর্যায়েও সে ফুটবল খেলেছে। তার স্বপ্ন ছিল তার পরিবারের অভাব অনটন দূর করে মায়ের কষ্ট লাঘব করা।

সূত্র: আমার দেশ 

No comments:

Post a Comment

এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক: প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২৭ বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের অভ্যন্তরে ২০০৯ ...