Monday, April 14, 2025

বুলেটে বিদ্ধ হয় নাছিমার কণ্ঠনালি। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামল-

বুলেটে বিদ্ধ হয় নাছিমার কণ্ঠনালি:

প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯: ১৩

জুলাই বিপ্লবে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন নাছিমা আক্তার। ঢাকায় বড় ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে লাশ হয়ে ফেরেন নোয়াখালীর মাইজদীর মেয়ে নাছিমা। ভাতিজার শরীর ভেদ করে নাছিমার কণ্ঠনালিতে লাগে গুলি। কিন্তু ভাতিজা সুস্থ হয়ে ফিরলেও শহীদ হন নাছিমা।

চব্বিশের উত্তাল জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সায়েন্সল্যাব মোড় প্রতিদিনই ছিল উত্তপ্ত। ধানমন্ডিতে আন্দোলনের প্রধানকেন্দ্র ছিল এলাকাটি। ১৮ জুলাই আন্দোলনে আহত হওয়ায় পরদিন বাসা থেকে বের হয়নি নাছিমার ভাতিজারা। ১৯ জুলাই সবাই বাসার ভেতরই ছিল। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় জানালার ফাঁক দিয়ে কিংবা ছাদে গিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখে সময় কাটিয়েছেন তারা। দুপুরের পর থেকে দেখতে পান মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া হেলিকপ্টার।

সেদিন হেলিকপ্টার থেকে কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছিল ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে। অসংখ্য মানুষ কাঁদানে গ্যাসে আহত হয়। বিকালে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে নাছিমা তার দুই ভাতিজাকে নিয়ে ছাদে যান সায়েন্সল্যাব এলাকার আন্দোলনের সবশেষ পরিস্থিতি দেখতে।

দুই ভাতিজা আগে এবং তাদের পেছনে ছুটতে থাকেন নাছিমা। ছাদে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হন ভাতিজা আইমান (২২)। একই বুলেট আঘাত করে নাছিমার শরীরেও। আইমানের বুকে লাগা বুলেট শরীর ভেদ করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। তবে সেটি গিয়ে লাগে নাছিমার গলায়। নাছিমার কণ্ঠনালি দিয়ে গুলি ঢুকে খাদ্যনালিতে গিয়ে আঘাত করে আটকে যায়। গুলিতে ছাদেই মুখ থুবড়ে পড়েন নাছিমা। গুলিবিদ্ধ আইমান উদ্দিন দৌড়ে নিচে নেমে মাকে বলেন, ‘আম্মু, আমার গায়ে গুলি লেগেছে।’ এ কথা বলেই অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। আরেক ছেলে খবর নিয়ে আসে, ‘ছাদে ফুপিও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন’।

একদিকে গুলিতে আহত ছেলে, অন্যদিকে ননদও ছাদে গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে খবর আসছে। দিশেহারা হয়ে পড়েন রেহানা আক্তার। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না তিনি। নিজেদের গাড়িচালককে কল করলেন। দুজনকে দ্রুত নিয়ে গেলেন পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ভর্তি করানো হয় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। কিন্তু ভাতিজা সুস্থ হয়ে ফিরলেও একদিন পর না ফেরার দেশে চলে যান নাছিমা।

শহীদ হওয়ার পরদিন নাছিমার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর মাইজদীতে। পাশেই মনপুরা গ্রামে নানার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।

২৪ বছর বয়সি নাছিমা আক্তার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মাদরাসায় পড়ালেখা করেছেন। কিন্তু এরপর আর পড়াশোনা করা হয়নি। চার বোন, তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন নাছিমা।

মা সালেহা বেগম আমার দেশকে বলেন, ‘মেয়ের জন্য প্রবাসী পাত্র ঠিক করা হইছিল। পাত্র তিন মাস পর দেশে ফিরলেই বিয়ে হবে। মেয়ের আর বিয়ে দেওয়া হইল না।’

মেয়ের জন্য আহাজারি থামছে না সালেহা বেগমের। তিনি আরো বলেন, ‘আল্লাহ আমার মেয়েকে দেশের জন্য পছন্দ করেছেন। আল্লাহ তারে নিয়া গেছে, সে শহীদ হইছে।’ বিচারের বিষয়ে সালেহা বলেন, ‘আমরা পুলিশ বা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করি নাই। কী হইব মামলা করে। আল্লাহ সব দেখবেন। আল্লাহই বিচার করবেন।

সূত্র: আমার দেশ 

No comments:

Post a Comment

এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক: প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২৭ বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের অভ্যন্তরে ২০০৯ ...