Sunday, April 13, 2025

বুড়া মানুষ গুলি খাইছে মরলে সমস্যা নেই’ (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

‘বুড়া মানুষ গুলি খাইছে মরলে সমস্যা নেই’:

প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯: ১৪

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, ডেমরা, কদমতলী ও রায়েরবাগে পুলিশ পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে আন্দোলনকারীদের। এ সময় অনেক পথচারীও শহীদ হয়েছেন। কাজলার মাছ ব্যবসায়ী শাহিনূর বেগম ছিলেন তেমনই একজন। যিনি পুলিশের ছোড়া গুলিতে ২২ জুলাই গুলিবিদ্ধ হন। যখন গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, তখন এক চিকিৎসক অবজ্ঞার সুরে বলেনÑ বুড়া মানুষ গুলি খাইছে, মরে গেলে সমস্যা নেই।

এসব কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন জুলাই বিপ্লবে শহীদ শাহিনূরের বড় মেয়ে হাফেজা।

হাফেজা বলেন, ‘হাসপাতালে প্রথমদিকে ডাক্তাররা আমার মায়েরে বারান্দায় ফালাইয়া রাখছে। চিকিৎসা করে নাই। সে কথা মনে পড়লে বুকটা ফাইট্টা যায়। সবার হাতে-পায়ে ধরেছি। এরপর যখন মায়ের চিকিৎসা শুরু করে, তখন ডাক্তার বলছে আমার মা’র জন্য আইসিইউ লাগবে। আবার দৌড়াতে শুরু করলাম। কোনো কাজ হয় নাই। এ সময় এক ডাক্তার কইল, বুড়া মানুষ গুলি খাইছে, মরে গেলে সমস্যা নেই। আইসিইউ যুবকদের জন্য দরকার।’

আক্ষেপের সুরে হাফেজা বলেন, ‘তিন দিন পর আইসিইউ পাইছি। এক মাস ৯ দিন মাকে রাখছিলাম ঢাকা মেডিকেলে। কিন্তু মায়ের মুখ থেকে একটা উত্তর, একটা কথা পাই নাই। পা আর হাত নাড়াইছে শুধু। খুব কষ্ট পাইয়া মরছে আমার মা।’

কিছুক্ষণ পর থেমে আবারও বলতে শুরু করেন শহীদ শাহীনূরের বড় মেয়ে। আফসোসের সুরে তিনি বলেন, ‘যদি প্রথম দিনই আইসিইউ পাইতাম, তাহলে হয়তো আমার মায়ের একটা জবান পাইতাম।’

পরিবারের সদস্যরা জানান, ৫৭ বছর বয়সি শাহিনূর বেগম ২২ জুলাই ফজরের নামাজ পড়ে কাজলা সেতুর দিকে হাঁটতে বের হয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আরো দু-তিনজন নারী। ওই এলাকায় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। প্রায় ঘণ্টাখানেক রাস্তায় পড়ে ছিলেন। সকাল ১০টার দিকে বাসায় এ খবর আসে। এরপর তাকে নেওয়া হয় শনির আখড়ার একটি হাসপাতালে। সেখান থেকে বলা হয় ঢাকা মেডিকেলে নিতে। সেখানে নিয়ে যান এক ভ্যানচালক।

হাফেজা বলেন, ‘মায়ের কাছে টাকা ছিল। স্বর্ণ-গয়না ছিল। সব নিয়ে গেছে গা। শুধু গায়ে একটা জামা-সেলোয়ার ছিল। মোবাইলটি সেলোয়ারের ভেতর থাকায় ওটা নিতে পারে নাই। খবর শোনার পর আমি যাইয়া দেখি, আমার মা পড়ে আছে মেডিকেলে। যে লোকটা মারে নিয়া গেছে হাসপাতালে, ওই লোকরে মনে হয় আল্লাহ ফেরেশতা হিসাবে পাঠাইছে আমার মায়ের জন্য। না হয় এক ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে ছিল, কেউ হাসপাতালে নেয় নাই। শুনছি, মা পা দিয়া শুধু ধাবড়াইছে সারাক্ষণ।’

শহীদ শাহিনূরের বড় মেয়ে জানান, তার মায়ের মৃত্যুর পর মেঘনা উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা খোঁজ-খবর নিয়েছেন। অনুদান হিসেবে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২ লাখ ও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

শাহিনূরের মেজ মেয়ে জেসমিন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, যতই অনুদান দেওয়া হোক না কেন, আমার মাকে কি আর ফিরে পাব? কোনো অনুদানই আমার মায়ের সমান নয়। তিনি অনেক কষ্ট করে আমাদের লালন-পালন করেছেন। আমি মায়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

সূত্র: আমার দেশ 

No comments:

Post a Comment

এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক: প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২৭ বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের অভ্যন্তরে ২০০৯ ...