BDC CRIME NEWS24
খুব কাছ থেকে হাফিজুলের মাথায় গুলি করে পুলিশ:
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১১: ৩৯
২০২৪ সাল। তারিখটি ছিল ২০ জুলাই। প্রতিদিনের মতো কাকডাকা ভোরেই ঘর থেকে বের হয়ে যান রিকশাচালক হাফিজুল সিকদার। বাসায় জীবিকার অন্বেষণের কথা বলে বের হয়ে যান। পরে ফেরেন লাশ হয়ে।
হাফিজুল সিকদার পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার চররঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম আবু বক্কর সিকদার। মূলত জীবিকা অন্বেষণের কথা বলে বাসা থেকে বের হলেও, সে সময়ের জুলাইয়ের উত্তাল আন্দোলনে অংশ নিতেন যুবদল নেতা হাফিজুল। তিনি নাজিরপুর শেখমাটিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হাফিজুল ঢাকার মধ্যবাড্ডা পোস্ট-অফিস গলিতে পুলিশের গুলিতে আহত ছাত্রকে তার রিকশায় তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে পুলিশ খুব কাছ থেকে হাফিজুলকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিতে হাফিজুলের মাথার খুলি ও মগজ এফোর-ওফোর হয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন হাফিজুল সিকদার।
হাফিজুলের প্রসঙ্গ তুলতেই অশ্রুভরা চোখে স্ত্রী আয়শা বেগম আমার দেশকে বলেন, ‘আমি বারবার বলেছিলাম, আজ তুমি রিকশা চালাতে যেও না। সে আমার কথা শোনেনি।’
‘কেন যেতে মানা করেছিলেন’- এমন প্রশ্নের জবাবে আয়শা বলেন, ‘বলতাম পুলিশের গুলিতে তুমি যদি মরে যাও, আমিসহ তোমার তিন শিশুসন্তানের কী হবে। আমার স্বামী বাসায় বলে যায় রিকশা চালাতে যাই। কিন্তু সে যেত ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলন করতে। এদিকে সংসার চলে না, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। তবু তিনি যুবদলের একজন নেতা, জিয়ার সৈনিক হিসেবে মাঠে নামতেন।’
আয়শা বলেন, ‘আমি শুনেছি আন্দোলনে আহত-নিহতদের রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যেতেন হাফিজুল। কতদিন বাজার নেই। আমার স্বামী, রাতে বাসায় ফেরে খালি হাতে।’
হাফিজুলের বাড়িতে সরেজমিনে জানা গেছে, অতিদরিদ্র পরিবার। নেই থাকার ঘর। কোনো আবাদি জমিও নেই। হাফিজুলের রেখে যাওয়া তিন সন্তান নিয়ে স্ত্রী আয়শা এখন চরম অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।
এ ব্যাপারে নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরূপ রতন সিং বলেন, ‘জুলাইয়ে গণহত্যায় নাজিরপুর উপজেলার চররঘুনাথপুর গ্রামের রিকশাচালক হাফিজুল সিকদার গত ২০ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন। নিহত হওয়ার সংবাদ পেয়ে তার বাড়িতে গিয়েছি। হাফিজুলের পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আলম খানকে অবহিত করা হয়েছে।
সূত্র: আমার দেশ
No comments:
Post a Comment