Tuesday, March 18, 2025

কাগজে আইনজীবী রাহাত বিল তুলেছেন তাপস। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

কাগজে আইনজীবী রাহাত বিল তুলেছেন তাপস:

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০১:২৪ 

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ৬ কোটি টাকার গ্যারান্টি নগদায়ন ঠেকানোর জন্য আদালতে দায়ের করা এক রিটের জন্য ২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার আইনি বিল দেওয়া হয়েছে। কাগজকলমে রিট পরিচালনার আইনজীবী হিসেবে নাম রয়েছে ব্যারিস্টার রাহাত খলিলের। অথচ বিলের ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা পেয়েছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক পরিদর্শনে দুর্নীতির এ তথ্য উঠে এসেছে। পরিদর্শনে গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাহাত খলিলের নামে দুর্দশাগ্রস্ত ও রুগ্‌ণ ব্যাংকটির আইনি বিল হিসেবে মোট ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

শেখ ফজলে নূর তাপস গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক দিন আগে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাইয়ের ছেলে। ২০২০ সালে মেয়র নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় তাপস উল্লেখ করেন, আইন পেশায় তাঁর বার্ষিক আয় ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৫ ও ২০০৬ সালে কাস্টম হাউসের অনুকূলে ৬ কোটি টাকার ১৫টি ব্যাংক গ্যারান্টি ইস্যু করে তৎকালীন ওরিয়েন্টাল ব্যাংক। মালিকানা বদলের পর আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এসব গ্যারান্টি জাল দাবি করে। কাস্টমস যেন বিল নগদায়ন করতে না পারে, সে জন্য ২০১৩ সালে একটি রিট করা হয়। ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবী হিসেবে ব্যারিস্টার রাহাত খলিল মামলাটি দেখতেন। অথচ গত ১১ বছরে রিট পিটিশনের ক্ষেত্রে কোনো রুলের শুনানির আবেদনই হয়নি। বরং বারবার ‘স্টে অর্ডার’-এর মাধ্যমে সময় ক্ষেপণ করা হয়েছে। উচ্চ আদালত থেকে ২০ বার স্থগিতাদেশ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ‘স্টে অর্ডার’-এর জন্য গড়ে আইনি বিল নেওয়া হয়েছে ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা যা অস্বাভাবিক মনে করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের শিডিউল অব চার্জে ‘স্টে অর্ডার’-এর বিল বিষয়ে উল্লেখ নেই। তবে ব্যাংকটির আইন বিভাগের প্রধান লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানিয়েছেন, অন্য ব্যাংক প্রতিটি ‘স্টে অর্ডার’-এর জন্য আইনজীবীকে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা দেয়।

অনেক সিনিয়র আইনজীবী হলে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বিল দেওয়ার নজির রয়েছে। এর মানে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা দেওয়ার সুযোগ থাকলেও রাহাত খলিলের নামে ২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার বিল করা হয়েছে। অন্যদিকে রিট পিটিশনের জন্য নিযুক্ত আইনজীবী রাহাত খলিল। অথচ এই লিগ্যাল বিলের বেশির ভাগ অর্থ আইনজীবী ফজলে নূর তাপসকে দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, পরিদর্শক দলকে কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ব্যারিস্টার তাপসকে নগদে এই অর্থ দেওয়া হয়েছে । 

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই রিট পিটিশনের জন্য কোনো শুনানি হয়নি। বরং স্থগিতাদেশের মাধ্যমে সময় ক্ষেপণ করা হয়েছে। শুনানির মাধ্যমে মামলাটি নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা জরুরি ছিল। ‘স্টে অর্ডার’-এর বিপরীতে ব্যয় করা অর্থের পরিমাণ অস্বাভাবিক এবং ব্যাংকের জন্য ফলপ্রসূ নয়। এ জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাঁর দায় এড়াতে পারেন না।

ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ব্যারিস্টার রাহাত খলিল সমকালকে বলেন, ১৮ বছরে তিনি এই বিল নিয়েছেন। আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের এমডির প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষোভ ছিল। একটি চক্রান্ত করে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়েছে। সেই ক্ষোভ থেকে এ ধরনের প্রতিবেদন করা হয়েছে। এর পেছনে অনেক বড় কাহিনি আছে। রিট পিটিশনের জন্য আইনজীবী হিসেবে তাঁর নাম থাকলেও ব্যারিস্টার তাপস কেন ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা নিয়েছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এসব খণ্ডিত তথ্য। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কোনো কথা বলেনি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাহাত খলিল অ্যান্ড এসোসিয়েটসকে লিগ্যাল বিল বাবদ ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা দিয়েছে ব্যাংক। ব্যাংকের এ খাতে খরচ করার সর্বোচ্চ সীমার যা অনেক বেশি। এর মধ্যে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আরও ৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা দেওয়া হয়। ব্যাংকের আইন বিভাগের বর্তমান প্রধান ২০২২ সালে যোগদানের পর এভাবে বিল দিতে অস্বীকৃতি জানান। তখন ব্যাংকের এমডি বলেন, এভাবেই তাঁকে বিল দেওয়া হয়েছে। আগের মতোই বিল দিতে তিনি নির্দেশ দেন।

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক প্রথমে ১৯৮৭ সালে আল-বারাকা ব্যাংক নামে কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৪ সালে ওরিয়ন গ্রুপ মালিকানায় এসে এর নাম দেয় ওরিয়েন্টাল ব্যাংক। ব্যাংকটিতে বড় ধরনের অনিয়ম ঘটায় বাংলাদেশ ব্যাংক ২০০৬ সালে প্রশাসক বসায় এবং ওরিয়েন্টাল ব্যাংক পুনর্গঠন করে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক নামকরণ করা হয়। মালিকানায় আসে মালয়েশিয়া ভিত্তিক আইসিবি গ্রুপ। 

২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন মালয়েশিয়ার নাগরিক শফিক বিন আব্দুল্লাহ। কর্মকর্তাদের আন্দোলনের মুখে তিনি ব্যাংক ছাড়তে বাধ্য হন এবং মালয়েশিয়া চলে যান। গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মজিবুর রহমানকে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। ব্যাংকটির ৭৫১ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ৬৬৫ কোটি টাকা বা ৮৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ খেলাপি। মূলধন ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ দেওয়া প্রশাসক মজিবুর রহমান সমকালকে বলেন, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি বিশেষ অডিট হয়েছে। তবে এখনও কোনো পরিপালন প্রতিবেদন তিনি পাননি। তবে তিনি শুনেছেন সাবেক এমডির সময়ে ঘটে যাওয়া অনিয়ম বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ব্যাংকটির মালয়েশিয়ান মালিকদের একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি সম্প্রতি দায়িত্ব নেওয়ায় এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।

শতকোটি টাকার জমি, সাড়ে ৩৩ কোটিতে বিক্রি

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টঙ্গী শিল্প এলাকায় রাজউকের চারটি প্লটে ৩৮৫ শতাংশ জমির মালিক ছিল আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। ২০০১ সালের জুলাই থেকে যা ব্যাংকের দখলে ছিল। নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ছাড়াই ২০২০ সালের আগস্টে তৎকালীন এমডির একক ক্ষমতায় মাত্র ৩৩ কোটি ৫০ লাখ টাকায় জমিটি বিক্রি করা হয় বেঙ্গল গ্রুপ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটুর কাছে। এই জমির মূল্য ১০০ কোটি টাকার বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

মূলত ২০০১ সালের আগে জমিটি টঙ্গী টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজের ঋণের বিপরীতে ব্যাংকে বন্ধক ছিল। ১০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের বিপরীতে আইনি প্রক্রিয়ায় মালিকানা পায় ব্যাংক। ব্যাংকের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে তৎকালীন এমডি নিয়মবহির্ভূতভাবে বাজার দরের অনেক কমে এই জমি বিক্রি করে দেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, ২০২০ সালে এই জমির বাজারমূল্য ছিল ১০০ কোটি টাকার বেশি। বর্তমান বাজারমূল্য আরও অনেক বেশি। তিনি শুনেছেন, আবুল খায়ের লিটুর কাছ থেকে জমি বাবদ ৬৫ কোটি টাকা নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ কয়েকজন ভাগ করে নেন। ব্যাংকের নামে জমা দেখানো হয় মাত্র ৩৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে এসেছে, নিয়মবহির্ভূতভাবে আবুল খায়ের লিটুর মালিকানাধীন সুইটস বেঙ্গল, বেঙ্গল এক্সেস, অরণ্য ক্রাফটস এবং তমা স্যাটেলাইট ক্যারভ নেটওয়ার্কের অনুকূলে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকার ঋণ দেওয়া হয়। ৮০ লাখ টাকার বেশি ঋণ অনুমোদনে পরিচালনা পর্ষদ বা নির্বাহী কমিটির অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও, এ ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি। ব্যাংকের এমডি একক ক্ষমতায় ভেঙে ভেঙে ঋণ অনুমোদন করেছেন। 

আমানতের কমিশনে কর্মকর্তার আয় ১৩ কোটি টাকা

মালিকানা পরিবর্তনের দেড় যুগে ব্যাংকটির আমানত না বেড়ে বরং কমেছে। অথচ আমানত আনার কমিশনের নামে বিপুল অর্থ খরচের প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে কমিশন হিসেবে ২৪ কর্মকর্তাকে নগদে ১৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ব্যাংকটির এক্সিকিউটিভ অফিসার হুমায়রা জাহানের নামে ১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার ভাউচার করা হয়েছে। নবায়নকৃত আমানতের বিপরীতে এ কমিশন পেয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এভাবে প্রণোদনা দেওয়াকে ‘অস্বাভাবিক’ বলা হয়েছে। 

জানতে চাইলে হুমায়রা জাহান সমকালকে বলেন, এমনিতেই আইসিবি ইসলামী ব্যাংকে কেউ টাকা রাখতে চায় না। ব্রোকার, রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি আমানত এনে দেওয়ায় একটা খরচ দেওয়া হয়েছে। তবে এখানে ব্যাংকের কোনো লোকসান হয়নি। 

আইসিবি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, আমানতের কমিশন হিসেবে অন্যের নামে ভাউচার করা হলেও, এর সুবিধাভোগী এমডিসহ পাঁচ কর্মকর্তার একটি সিন্ডিকেট। ব্যাংককে ঠকিয়ে ঘুরেফিরে এরাই সুবিধা নিয়েছেন। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে কমিশন হিসেবে ১৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা নেওয়ার কথা বলা হলেও আসলে নেওয়া হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। বাকি কমিশন নেওয়া হয়েছে ‘অন্যান্য’ খাতে খরচ দেখিয়ে।

পরামর্শক বিলের নামে ভাগবাটোয়ারা

পরামর্শক বিলের নামে ভাগবাটোয়ারার তথ্য পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকটির ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস বিভাগের প্রধান শাখাওয়াত হোসেনের ভাই মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আইনজীবী না হলেও ২০১৯ সাল থেকে তাঁকে প্রতি মাসে আড়াই লাখ টাকা সম্মানিতে ভ্যাট ও ট্যাক্স কনসালট্যান্ট নিয়োগ দেয় ব্যাংক। ২০২৩ সালের মে পর্যন্ত তাঁকে সম্মানি দেওয়া হয় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা। এর পর আতিকুরের জায়গায় তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে নিবন্ধিত বিজনেস কনসালটেন্সি সার্ভিস নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রতি মাসে প্রতিষ্ঠানটিকে দেওয়া হচ্ছে দেড় লাখ টাকা। আশ্চর্যের বিষয় হলো, আতিকুরকে দেওয়া পরামর্শক সম্মানীর মধ্যে ব্যাংকের কর্মকর্তা আবদুল্লাহ কিপসিয়া পেয়েছেন ২৫ লাখ টাকা। বক্তব্য জানার জন্য শাখাওয়াত হোসেনকে কয়েক দফা ফোন এবং এসএমএস করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। 

ব্যাংকের ভ্যাট-সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির কথা বলে এসবিএস ল’ কনসালট্যান্টস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের আড়ালে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৭৫ লাখ টাকা নেওয়া হয়। অথচ এই ল’ ফার্মের মালিক সুজন চন্দ্র দাস বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দলের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন, তিনি পেয়েছেন মাত্র ১৩ লাখ টাকা। বাকি টাকা ব্যাংকটির অ্যাকাউন্টস বিভাগের ইনচার্জ শাখাওয়াত হোসেনের প্রতিনিধি নিয়েছেন। এ ছাড়া বিবিধ খরচের নামে ব্যাংকটির ট্রেজারি বিভাগের প্রধান দেলোয়ার হোসেন ২ লাখ টাকা নিলেও তার কোনো ভাউচার নেই। এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য দেলোয়ার হোসেনকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাকাউন্টস ইনচার্জ শাখাওয়াত হোসেন, ট্রেজারি হেড দেলোয়ার হোসেনসহ এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যোগসাজশের মাধ্যমে অর্থ আত্মাসাৎ করেছেন, ব্যাংকের এমডি যা অনুমোদনে করেছেন। প্রতিবেদনে তৎকালীন এমডিসহ এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল দুই মাস আগে এই প্রতিবেদন জমা দিলেও এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সমকালকে বলেন, ব্যাংকটিতে এরই মধ্যে প্রশাসক বসানো হয়েছে। প্রতিটি জালিয়াতি ধরে ধরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও যত অনিয়ম 

করোনাকালীন ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত জুম প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন সভা আয়োজনের জন্য ৮৭ হাজার মার্কিন ডলার পাঠানো হয় মালয়েশিয়ায়। এর মধ্যে ৪৩ হাজার ৫১০ ডলার পাঠানো হয় সুইফটের মাধ্যমে। বাকি ৩৮ হাজার ৪৯০ ডলার ব্যাংকটির তখনকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক বিন আব্দুল্লাহ নগদে তুলে নিয়েছেন। শুভ্র ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ রয়েছে ১৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

একই জমি একাধিক ব্যাংকে বন্ধ রেখে ঋণ নিয়েছে ওই প্রতিষ্ঠান। ২০১০ সালের পর ব্যাংকটির নির্বাহী কমিটির কোনো সভা হয়নি। অথচ ৬৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। শফিক বিন আব্দুল্লাহ এমডি হওয়ার পর ১৮১ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। এর মধ্যে ১০৯ কোটি টাকা খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। সব মিলিয়ে গত বছরের জুন পর্যন্ত আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ঠেকেছে ২ হাজার ৩৩ কোটি টাকা।

সূত্র: সমকাল 

No comments:

Post a Comment

খুব কাছ থেকে হাফিজুলের মাথায় গুলি করে পুলিশ। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 খুব কাছ থেকে হাফিজুলের মাথায় গুলি করে পুলিশ:  প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১১: ৩৯ ২০২৪ সাল। তারিখটি ছিল ২০ জুলাই। প্রতিদিনের মতো...