Friday, March 14, 2025

১৫ জুলাই হামলায় কমিটির প্রতিবেদন- ঢাবিতে উস্কানি জুগিয়েছে ৭০ শিক্ষক ও ১২২ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

১৫ জুলাই হামলায় কমিটির প্রতিবেদন-

ঢাবিতে উস্কানি জুগিয়েছে ৭০ শিক্ষক ও ১২২ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী:

প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৫, ২২: ৫৭

গত বছর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ৭০ জন শিক্ষক ও ১২২ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম উঠে এসেছে তথ্যানুসন্ধান কমিটির কাছে। এসব শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী নানাভাবে হামলায় ইন্ধন ও উস্কানি দিয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে জানা যায়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের হাতে এ প্রতিবেদন জমা দেন তথ্যানুসন্ধান কমিটির সদস্যরা। এরপর সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন কমিটির আহ্বায়ক ও আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুল হক সুপণ। প্রতিবেদনে হামলার ঘটনায় মাত্র ২৫ শতাংশ তারা তুলে আনতে পেরেছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২২ শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করেছি। বহিরাগত অনেকেও হামলায় জড়িয়েছে। বিশেষত মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

মাহফুজুল হক বলেন, উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মেয়েদের বাস থেকে নামাচ্ছে এবং পেটাচ্ছে। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। বিশেষত মেয়েগুলোকে ধরে ধরে পেটানো হচ্ছে। একজন মেয়ে হাত ছাড়িয়ে চলে যেতে চাচ্ছিল, তার হাত ধরে রেখেছে, এটা তো শ্লীলতাহানীর পর্যায়ে পড়ে।

হামলাকে পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৫ জুলাইয়ের হামলা ছিল পুরোটাই পরিকল্পিত। সেখানে দুইটি গ্রুপ ছিল সাদা ক্যাপ পরিহিত; একটি গ্রুপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে, আরেকটি গ্রুপ ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের সামনে। হামলায় সরকারি বাংলা কলেজ, কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের পাওয়া গেছে। আগে থেকে পরিকল্পনা না হলে এভাবে সম্ভব না।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার, ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগের ফটকের এবং জরুরি বিভাগের ভেতরেও হামলা হয়েছে। ডাক্তারদের চিকিৎসা না দিতে বলা হয়েছে। সেসব ভিডিও আমরা পেয়েছি।

প্রতিবেদনে তারা জানান, হামলার নিকৃষ্টতম দিক ছিল নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং হাসপাতালে গিয়েও হামলা করা হয় এবং ডাক্তারদের চিকিৎসা প্রদানে বাধা প্রদান করা হয়। এটিকে তারা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।

সেদিন মেয়েদেরকে টার্গেট করে মারা হয়েছে উল্লেখ করে মাহফুজুল হক সুপণ বলেন, মেয়েদের উপর হামলা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও (ছাত্রলীগের)। এসব হামলায় প্রশাসন অবগত থেকেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে প্রশাসনের নেগলিজেন্সের (অবহেলা) প্রমাণ পেয়েছি আমরা।

তিনি বলেন, উপাচার্যের বাসভবনের ফটকের সামনে মেয়েদের পেটানো হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন কিছু জানেন না। ১৬ তারিখ বাইরে থেকে বাস এনে মুহসীন হলের মাঠে রাখা হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কোনো ব্যবস্থা দেখেনি। মুজিব হলের পকেট গেট দিয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ করানো হয়েছে, হলের কর্মচারীরা প্রভোস্ট ও আবাসিক শিক্ষকদের ফোন দিয়েছে। তারা ফোন ধরেনি। এখানে শুধু অবহেলা হয়েছে ব্যাপারটা এমন নয়, হয়ত তারা এসব জানতো। জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

তিনি বলেন, উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মেয়েদের পেটানো হচ্ছে। আমাদের কাছে অস্বাভাবিক লেগেছে, উপাচার্য বা প্রশাসনের কেউ উঁকিও দেননি। কোনো মন্তব্য করেননি। পরবর্তীতে কোনো ব্যবস্থাও নেননি।

প্রায় ৭০ জন শিক্ষক হামলা উস্কে দেওয়ার ভূমিকা রেখেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা তদন্তে দেখেছি যারা আন্দোলন করছে, তাদের ‘পাকিস্তানের দালাল’, ‘শিবিরকর্মী’ বা ‘ছাত্রদল কর্মী’- বলে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন এসব শিক্ষকরা। ছাত্ররা এসব পোস্ট প্রিন্ট করে আমাদের কাছে জমা দিয়েছে। সেসব শিক্ষকরাও এমন কথা স্বীকার করেছেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

এ প্রতিবেদনে হামলা ও সহিংসতার কতটুকু কাভার করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আরও শনাক্ত করার সুযোগ আছে। তবে আমরা মনে করি, ২৫ ভাগ তুলে আনতে পেরেছি আমরা।

সিসিটিভি ফুটেজের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ব্যক্তিগত ভিডিও সংগ্রহ করেছি। কিন্তু আমরা সিসিটিভি ফুটেজ পাইনি। প্রত্যেক হলের হার্ডড্রাইভ খুলে নিয়ে গেছে। ভিসি চত্বরের হার্ডড্রাইভে আমরা কিছু পাইনি। অনেক জায়গায় ক্যামেরা এমনভাবে লাগানো, কেবল গাছ দেখা যায়।

প্রতিবেদনের সাথে দেওয়া সংবাদ সংক্ষেপে সত্যানুন্ধান কমিটি জানায়, হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ জমা দিয়েছিল তার সাথে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কন্টেন্ট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও এবং প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান বিচার বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রতিবেদন গ্রহণ শেষে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, প্রতিবেদনটি সিন্ডিকেটে তোলা হবে। এরপর তদন্ত কমিটি ও ট্রাইবুনাল গঠনসহ আইনি প্রক্রিয়াগুলো হবে।

সূত্র: আমার দেশ 

No comments:

Post a Comment

১৫ জুলাই হামলায় কমিটির প্রতিবেদন- ঢাবিতে উস্কানি জুগিয়েছে ৭০ শিক্ষক ও ১২২ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 ১৫ জুলাই হামলায় কমিটির প্রতিবেদন- ঢাবিতে উস্কানি জুগিয়েছে ৭০ শিক্ষক ও ১২২ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী: প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৫, ২২: ৫...