Friday, November 29, 2024

সাবেক গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের স্ত্রী-স্বজনদের সম্পদের পাহাড়। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

সাবেক গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের স্ত্রী-স্বজনদের সম্পদের পাহাড়:

(সাবেক গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ * ছোট ভাই রবিন ছিলেন এলাকার স্বঘোষিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী)

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

সাবেক গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে স্ত্রী-সন্তানসহ স্বজনরা অবৈধভাবে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। গত পাঁচ বছর আগেও ঋণের দায়ে যারা পালিয়ে বেড়াতেন আজ তাদের এতো সম্পদ জনমনে জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্নের। জাকিরের মন্ত্রিত্ব থাকাকালে তার ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান রবিন ছিলেন এলাকার স্বঘোষিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার কথায় চলত থানা ও উপজেলার সব অফিস-আদালত। রবিনের ছোট ভাই মাসুম ছিলেন ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু উত্তোলনের হোতা।

রৌমারীর ডিসি সড়কসহ সব স্থাপনায় তিনি ব্রহ্মপুত্রের পাড় কেটে কোটি কোটি ফুট বালু সরবরাহ করতেন। ফলে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে গ্রামের পর গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। আরেক ছোট ভাই রাশেদ ছিলেন প্রতিমন্ত্রীর এপিএস। তিনি প্রাইমারি সেকশনের সব বদলি-বাণিজ্যে হস্তক্ষেপ করতেন। কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। মন্ত্রীর স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা ছিলেন উপজেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী। সে সুবাদে সব বিষয়ে তিনি হস্তক্ষেপ করতেন। যার মাধ্যমে তিনি অপকর্মগুলো করতেন তার নাম আকতার আহসান বাবু। তিনি প্রতিমন্ত্রীর চাচাত ভাই। এই বাবুও কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।

কাবিখা, কাবিটাসহ এমন প্রকল্পগুলো দেখতেন প্রতিমন্ত্রীর আরেক চাচাত ভাই মশিউর ওরফে ফশিউর। পাঁচ বছর আগে যাকে বাকিতে পণ্য দিত না দোকানদার আজ তার রয়েছে বহুতল ভবন, গাড়ি ও কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স। এছাড়া ছেলে সাফায়াত বিন জাকির ওরফে সৌরভ, মেয়ে সঞ্চয়ীর নামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স ও ব্যবসার শেয়ার। জাকিরের আরেক চাচাত ভাই সিক্ত মণ্ডলের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী কাজ করত। এ বাহিনীতে সেলিম, আযম, নোবেল, সাব্বির, বিপ্লব, সাজেদুল, জোব্বার, গাউছুল, জিয়া, সিদ্দিক, শেখ ফরিদসহ শতাধিক যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ছিলেন। তারা প্রায় প্রতিদিনই জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক, টেন্ডারবাজিসহ নানা কুকর্মে লিপ্ত থাকত। সিক্তর বড় ভাই সোয়েব আক্তার সোহাগ ছিলেন রৌমারী হাটের ইজারাদার।

হাটে অতিরিক্ত টোল আদায় ও পুরোনো পজিশন ভেঙে দিয়ে নতুন ব্যবসায়ীদের সে পজিশন দেড় থেকে ২ লাখ টাকায় দিতেন। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনিও কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। প্রতিমন্ত্রী জাকিরের শ্যালক মাজেদুল, এনামুল ও শহিদুল কায়সার নামে এক ভাতিজা ছিলেন চিলমারীর ত্রাস। ব্রহ্মপুত্রের বালু সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন তারা। প্রতিমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে তারাও জমি দখল, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ছিলেন সিদ্ধহস্ত। হেন কোনো কাজ নেই তারা করেননি। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর থেকে তারাও লাপাত্তা রয়েছেন। জাকির হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা রৌমারী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের এফডব্লিউভি (ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার ভিজিটর) হিসাবে দাঁতভাঙা কমিউনিটি সেন্টারে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি উপজেলা কার্যালয়ে রয়েছেন। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জাকির হোসেন এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ে তিনি কর্মস্থলে হাজির হননি। স্বামীর এমপিত্বের প্রভাব খাটিয়ে হাজিরা খাতা আপডেট রেখে প্রতিমাসের বেতন উত্তোলন করেছেন তিনি। তার নামে রয়েছে লন্ডন, ঢাকা, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রৌমারীতে একাধিক বাড়ি। রয়েছে অঢেল অর্থ-সম্পদ ও বিলাসবহুল একাধিক গাড়ি।

জাকির হোসেনের চাচাত ভাই মোস্তাফিজুর রহমান রবিন ছিলেন এলাকার স্বঘোষিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। উপজেলার সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ ছিল তার। সে সময় বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিএফ, ভিজিডি, টিআর, কাবিখা, কাবিটা, যত্ন প্রকল্প, কার্ডের নাম, রাজস্ব উন্নয়ন, ঠিকাদারিতে সিন্ডিকেট, এডিপিসহ যাবতীয় প্রকল্পের ভাগবাটোয়ারা করতেন। প্রভাব খাটিয়ে করতেন ঠিকাদারি ব্যবসাও। এতে বাড়ি, গাড়ি ও অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। বর্তমানে উপজেলা মডেল মসজিদ ও কয়েকটি ব্রিজের কাজ অসমাপ্ত রেখেই লাপাত্তা হয়েছেন তিনি। রবিনের ছোট ভাই রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ছিলেন প্রতিমন্ত্রীর এপিএস।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের ফিল্ড অফিসার হিসাবে কাজ করতেন। পরে জাকির হোসেন এমপি থেকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর রাশেদকে এপিএস হিসাবে নিয়োগ দেন। এর পর থেকে প্রতিমন্ত্রীর দোহাই দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে অনুদান বরাদ্দ নিয়ে কাজ না করেই কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। প্রাইমারি সেক্টরে সব বদলি-বাণিজ্য তিনি পরিচালনা করেন। ঢাকার মিরপুরে তার রয়েছে দুটি ফ্ল্যাট, কোটি টাকার ব্যবসা ও ঠিদাকারি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ব্রিজের কাজ না করেই লাপাত্তা রয়েছেন তিনি। রবিনের আরেক ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন মাসুম, প্রতিমন্ত্রীর আরেক চাচাত ভাই আকতার আহসান বাবু ও মশিউর ওরফে ফশিউরও হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক। প্রতিমন্ত্রী জাকির ধরা খাওয়ার পর তিনিও পালিয়ে রয়েছেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর প্রতিমন্ত্রীর গোটা পরিবার ও তার অনুসারীরাও গা-ঢাকা দিয়েছেন। একাধিকবার তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ থাকায় সম্ভব হয়নি।

সূত্র: যুগান্তর

No comments:

Post a Comment

এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক: প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২৭ বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের অভ্যন্তরে ২০০৯ ...