BDC CRIME NEWS24
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন-
সবচেয়ে বেশি লাভবান বিএনপি, চাপে জাতীয় পার্টি:
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০০ পিএম
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হলো শুক্রবার । এই ১০০ দিনে রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে লাভবান হয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি সুবিধা পেয়েছে জামায়াতে ইসলামীও। এ দুই দলের বাইরে ইসলামী আন্দোলন এবং বামপন্থি দলগুলোও সাংগঠনিকভাবে কিছুটা সুবিধা ভোগ করছে।
অন্যদিকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের পাশাপাশি তাদের জোটসঙ্গী অনেকে বিপদে পড়েছে। দলটির নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটভুক্ত ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের শীর্ষ নেতা রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনু হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে আছেন।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর তাদের নির্বাচনী জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টি শুরুতে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দফার সংলাপে ডাকও পেয়েছিল দলটি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জাপাকে সংলাপে ডাকার বিরোধিতা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সমন্বয়ক সারজিস আলম জাপাকে সংলাপে ডাকার তীব্র বিরোধিতা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার সংলাপে জাপাকে আর ডাকা হয়নি। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়- তারা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিজমের নীরব সমর্থন করে গেছে। তারা অবৈধ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সেগুলোর বৈধতা দিয়েছে। এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে বিরোধেও জড়ায় জাপা। এসবের জেরে গত ৩১ অক্টোবর ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দেয়া হয় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।
৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে পাল্টে যায় বিএনপির ভাগ্য। পরেরদিন খালেদা জিয়ার মুক্তির আদেশে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর বিএনপির বেশ কিছু সিনিয়র নেতা কারাগার থেকে মুক্তি পেতে থাকেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অনেকে কিছু মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশে সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের বক্তব্য-বিবৃতি প্রচার করা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে গণমাধ্যমে তার বক্তব্য গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হচ্ছে।
বিএনপি নেতারা এখন স্বাধীনভাবে রাজনীতির পাশাপাশি নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারছেন। আওয়ামী লীগের আমলে দখল হয়ে যাওয়া সম্পদ ফিরে পাচ্ছেন। বিনা বাধায় উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করছেন যে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি।
জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে এই আন্দোলনের পক্ষে সংসদ এবং সংসদের বাইরে বিভিন্ন বক্তব্য ও বিবৃতি দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে বঙ্গভবনে দাওয়াত ছিল জাতীয় পার্টির।
কিন্তু দৃশ্যপট পাল্টে যায় গত ৩১ অক্টোবর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে জাতীয় পার্টি রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তুলে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা’ ব্যানারে মশাল মিছিল করা হয়। আর ওই মিছিলে হামলার অভিযোগ এনে দলটির কাকরাইল কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
২০০৮ সাল থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করে আসছে জাতীয় পার্টি। গত চারটি সংসদে মধ্যে তিনটিতে তারা সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হওয়ার পাশাপাশি সরকারের ইচ্ছায় সংসদের বিরোধী দলীয় আসনে বসেছে।
বৈষম্যবিরোধীদের একাংশের দাবি, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর হচ্ছে জাতীয় পার্টি। গত ১৫ বছর তারা আওয়ামী লীগের ওপর ভর করে রাজনীতি করেছে। এখন জাতীয় পার্টির ওপর ভর করে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছে। যার কারণে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তোলা হচ্ছে।
সূত্র: ভোরের কাগজ
No comments:
Post a Comment