BDC CRIME NEWS24
গুলিবিদ্ধ আরিফুলের এক পা অকেজো:
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৫, ০৯: ১৮
আতর, তসবিহ ও টুপি বিক্রি করতেন আরিফুল ইসলাম রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায়। তার আয়েই চলত আট সদস্যের পরিবার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে গত ১৮ জুলাই ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে নামেন তিনি।
প্রায় প্রতিদিন সক্রিয় থাকতেন আন্দোলনে। ৪ আগস্ট গুলিবিদ্ধ এক শিশুকে উদ্ধার করতে গিয়ে তিনিও পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। চারটি গুলি লাগে তার বাম পায়ে। বেশ কয়েক দফা চিকিৎসার পরও সেই পা এখনো অকেজো। ফলে তাকে নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে পরিবার।
জানা যায়, আরিফুল পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের নতুন শ্রীনগর গ্রামের হারুন অর রশিদ ও শামীমা বেগম দম্পতির বড় ছেলে। পাঁচ বছর আগে ঢাকায় যান ২১ বছর বয়সি আরিফুল। কারফিউর মধ্যে ৪ আগস্ট বিকেলে মিরপুর ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভবনের ছাদ থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে পুলিশ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মুহূর্তেই এক শিশুসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন।
গুলিবিদ্ধ শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে চারটি গুলি লাগে আরিফুলের বাঁ পায়ে। গুলিগুলো তার পায়ের ভেতর দিয়ে ছিদ্র হয়ে বের হয়ে যায়। আন্দোলনকারী ছাত্ররা তাকে পাশের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে আগারগাঁওয়ের অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু) ভর্তি করান। পরে পরিবারকে ফোন করে জানানো হয় আরিফ গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। সেখানে একমাস চিকিৎসা শেষে আরিফকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাড়িতে এসে আরিফুল ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। পায়ের ক্ষতস্থানে পচন ধরে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলামের সহযোগিতায় আরিফুলকে সিএমএইচে ভর্তি করানো হয়। বাঁ পায়ে তার এখনো খাঁচা পরানো। হাঁটতে পারেন না। এ অবস্থায় তার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে পরিবার।
আরিফুল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর এলাকায় ভ্যানে করে আতর, তসবিহ ও টুপি বিক্রি করতাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হলে দোকান বন্ধ রেখে আন্দোলনে অংশ নিই। ৪ আগস্ট মিরপুর গোলচত্বরে গুলিবিদ্ধ শিশুকে উদ্ধার করতে গিয়ে আমিও গুলিবিদ্ধ হই। আমার বাম পায়ে চারটি গুলি লাগে। অনেক চিকিৎসার পরও এখনো আমার পা ভালো হয়নি। যারা গুলি করেছে আমি তাদের বিচার চাই।
আরিফুলের মা শামীমা বেগম আমার দেশকে বলেন, আরিফের পায়ে চারটা গুলি লাগে। এক মাস চিকিৎসা শেষে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। এখনো সে অসুস্থ। তাকে বিদেশ নিয়ে চিকিৎসা করানো গেলে হয়তো সে সুস্থ হয়ে উঠবে।
আরিফুলের বাবা হারুন অর রশিদ আমার দেশকে বলেন, আমরা আরিফুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। স্ত্রীসহ তার একটি এক বছরের ছেলে আছে। আরিফুলের স্ত্রীকে একটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলে, ভবিষ্যতে তারা সংসার নিয়ে চলতে পারত।
সূত্র: আমার দেশ
No comments:
Post a Comment