Friday, April 18, 2025

সুন্দরী মেঘনা ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিলেন আরো ২ রাষ্ট্রদূতকে। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

সুন্দরী মেঘনা ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিলেন আরো ২ রাষ্ট্রদূতকে:

প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮: ৪৬

কথিত মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মেঘনা আলমের অন্ধকার জগতের একের পর এক তথ্য উঠে আসছে। সৌন্দর্য, স্মার্টনেস ও ইংরেজি জানার কারণে দ্রুতই যে কারো কাছে নিজেকে মোহনীয় করে তুলতে পারতেন মেঘনা। তবে ইতিবাচক এসব গুণকেই পরে প্রতারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তার প্রথম দিকের টার্গেট ছিল গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডির ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানরা। পরে নিজের নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে প্রতারণার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যান।

অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকারী বিদেশি রাষ্ট্রদূতদেরও প্রতারণার টার্গেট করেছিলেন মেঘনা। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ফান্ড সংগ্রহের নামে হাতিয়ে নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা। সর্বশেষ ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিলেন সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতকে। তবে শেষ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তাকে গ্রেপ্তার হতে হয়েছে। তার গ্রেপ্তারে সারা দেশে হইচই পড়ে যায়।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সূত্র জানিয়েছে, শুধু সৌদি আরব নয়, বরং আরো দুই দেশের রাষ্ট্রদূতকে ফাঁদে ফেলেছেন মেঘনা। কিন্তু তারা মান-সম্মানের ভয়ে কিছু বলেননি। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছেন। এদের একজন হলেন ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগের আলোচিত এক রাষ্ট্রদূত, যিনি বিগত স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করেছেন। তবে তিনি এখন আর ওই পদে নেই। নিজ দেশের অন্য একটি বিভাগের দায়িত্ব পালন করছেন। আরেকজন ছিলেন সার্কভুক্ত একটি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশেই কর্মরত। তারা দুজন পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি।

মেঘনা আলমের সহযোগী দেওয়ান সমীরও পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি স্বীকার করেছেন। মামলার প্রয়োজনে ওই দুই রাষ্ট্রদূতের কাছে তথ্য নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও চ্যান্সেরি পুলিশের শাখা। তারা ইতোমধ্যেই একটি নোট তৈরি করেছে।

সূত্র জানায়, একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে ডিবি। বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছে। মেঘনার মোবাইল ফোন ও পেনড্রাইভ জব্দ করে ডিবি ওই গোয়েন্দা সংস্থার ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

গত ৯ এপ্রিল রাতে মডেল মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ফেসবুক লাইভে থাকার সময় মেঘনা অভিযোগ করেন, পুলিশ পরিচয়ধারীরা তার বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। লাইভটি প্রায় ১২ মিনিট চলার পর বন্ধ হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে সেটি ডিলিটও হয়ে যায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী, পরদিন ১০ এপ্রিল রাতে আদালত তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেয়। তিনি এখন কারাগারে আছেন। সুনির্দিষ্ট কারণ না জানিয়ে মেঘনা আলমের আটকের ঘটনা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। অপরাধে জড়ালে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার না করে তাকে কেন বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিতর্কিত ‘প্রিভেন্টিভ ডিটেনশন’ বা প্রতিরোধমূলক আটক করা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

এরপর ১০ এপ্রিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে মেঘনার সহযোগী সমীরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে আদালতে হাজির করলে আদালত তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এ ছাড়া ১৩ এপ্রিল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মেঘনা আলমের বাবার পক্ষে এই রিট দায়ের করেন তিনি। বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে গত ১০ এপ্রিল মেঘনাকে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে রাখার আদেশ দেয় আদালত। ডিবি পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের সদ্যবিদায়ী অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির এক যুগ্ম কমিশনার আমার দেশকে জানান, মেঘনা বড়মাপের একজন প্রতারক। ফান্ড সংগ্রহের নামে ভিআইপিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

মেঘনাকে গ্রেপ্তারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ডিবির এক কর্মকর্তা জানান, সৌদি রাষ্ট্রদূতকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মেঘনা। পরে সৌদি রাষ্ট্রদূত বিষয়টি কূটনৈতিক কোর কমিটির প্রধানকে অবহিত করেছিলেন। কূটনৈতিক কোর কমিটি ডিএমপির চ্যান্সেরি বিভাগকে জানিয়েছিল। পরে ডিবি মেঘনা আলম ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তারের আওতায় আনে।

সূত্র জানায়, মেঘনা নিজেকে আগে ‘মিস বাংলাদেশ’ নামে পরিচয় দিতেন। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের নামে বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দূতাবাসের জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। পরে ধীরে ধীরে ওইসব দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কোনো অনুষ্ঠানে ভিজিটিং কার্ড দেওয়া-নেওয়া হতো। একপর্যায়ে সম্পর্ক করে ব্ল্যাকমেইল করতেন। তার কথিত ‘সিরিয়াস ওয়ার্ক’ নামে একটি ফান্ডে টাকা দিতে বলতেন ওই ব্যক্তিকে।

সূত্র জানায়, অনেকেই তার প্রতারণার বিষয়টি টের পেলেও তাকে সতর্ক করতে গেলে তিনি ডিজিটাল মামলার ভয় দেখাতেন। ওই ব্যক্তির সঙ্গে ভুয়া ছবির কাটিং করে সেগুলো দেখাতেন। এতে ভিকটিম ভয় পেতেন।

সূত্র জানায়, মেঘনা ও তার সহযোগী সমীরের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এসেছে ডিবিতে। সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখছে ডিবি। মেঘানার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের বেশি ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

সূত্র: আমার দেশ 

No comments:

Post a Comment

এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক: প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২৭ বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের অভ্যন্তরে ২০০৯ ...