Wednesday, March 5, 2025

পুলিশের গুলিতে মাথার খুলি উড়ে যায় শহীদ আবদুল্লাহর। (BDC CRIME NEWS24)

BDC  CRIME NEWS24

পুলিশের গুলিতে মাথার খুলি উড়ে যায় শহীদ আবদুল্লাহর:

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৫, ১০: ৫০

২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দিয়ে প্রথমে আহত ও পরে শহীদ হন কলেজ শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ। যশোরের শার্শা উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী বড়আঁচড়া গ্রামের আবদুল জব্বারের ছেলে তিনি। রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। বাবা আবদুল জব্বার দিনমজুর।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ভারতে পালানোর পর বিজয় উদযাপনে মেতে ওঠে গোটা দেশ। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের সেই দুপুরে রাজধানীর তাঁতিবাজার এলাকায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নেন আবদুল্লাহ। এ সময় বংশাল থানার কাছে পুলিশের গুলিতে মাথার খুলির একাংশ উড়ে যায় তার। ২৪ বছর বয়সি এই তরুণকে আহতাবস্থায় তার সহযোদ্ধারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

এদিকে খবর পেয়ে গ্রাম থেকে হাসপাতালে ছুটে যান আব্দুল্লাহর বাবা-মা ও ঢাকায় অবস্থানরত বোন। ১৭ দিন চিকিৎসার পর নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় তাকে নেওয়া হয় ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। গত বছরের ১৪ নভেম্বর সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। গুলিতে খুলি উড়ে যাওয়ার পরেও ৭২ দিন বেঁচেছিলেন শহীদ আবদুল্লাহ।

শহীদ সন্তানের হত্যাকারীর বিচার দাবি করে বাবা আবদুল জব্বার বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করার হুকুমদাতা তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি হুকুম না দিলে পুলিশ গুলি করত না। আমার ছেলেসহ প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতা শহীদ হতো না। সুতরাং ওই আন্দোলনে নিহত সবার দায় শেখ হাসিনার। একজন শহীদের বাবা হিসেবে আমি সন্তান হত্যার বিচার চাই। বিচার চাই শেখ হাসিনার। যাতে ভবিষ্যতে কোনো প্রধানমন্ত্রী আর খুনি হয়ে উঠতে না পারেন।’

আবদুল জব্বার জানান, তিনি লেখাপড়া শিখতে না পারলেও সন্তানদের শিক্ষিত করার চেষ্টা করেছেন। তার বড় দুই ছেলে মাধ্যমিকের পর জীবিকার প্রয়োজনে কাজে ঢুকেছেন। একজন গাড়িচালক, অন্যজন বন্দরশ্রমিক। একমাত্র মেয়ে স্নাতক পাস, থাকেন স্বামীর সঙ্গে রাজধানীতে।

ছেলেকে বাঁচানোর জন্য পরিবারের সদস্যরা তাদের সঞ্চিত সব টাকা খরচ করেছেন। হাত পেতেছেন শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছেও। এখনো বিপুল টাকা দেনা রয়েছে তাদের।

আবদুল জব্বারের দাবি তিনি বিএনপির অনুসারী। আর স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ছেলে শহীদ আবদুল্লাহ যুক্ত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে।

আবদুল্লাহর লাশ গ্রামের বাড়িতে আনার পর বেনাপোল বলফিল্ডে জানাজা হয়। বিপুলসংখ্যক মানুষ জানাজায় অংশ নেন। এরপর গার্ড অব অনার দিয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয় বড়আঁচড়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে।

এরপর জব্বারের বাড়িতে দুইবার এসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিত এবং জেলা-উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা ওই বাড়িতে গিয়েছেন। তারা পরিবারটিকে সাধ্যমতো সহযোগিতাও করেছেন। এর মধ্যে নৌবাহিনী থেকে দেওয়া হয়েছে এক লাখ টাকার অনুদান। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতের আমির এক লাখ টাকা করে, উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে এখনো কোনো সহযোগিতা পাননি বলে জানান জব্বার। তবে ফাউন্ডেশনের গ্রুপে সংযুক্ত আছেন এবং নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মা মাফিয়া মনে করেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে গেলে হয়তো তার ছেলেকে বাঁচানো যেত। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে যশোরের আঞ্চলিক ভাষায় মাফিয়া বলেন, ‘আহতদের জন্য সরকার এখন অনেক কিছুই করছে। কিন্তু আমার ছেলেডা বাঁইচে থাকতি কত্তি পাল্লো না। তালি হয়তো আব্দুল্লাহ বাঁইচে যাইতো।’

সূত্র: আমার দেশ 

No comments:

Post a Comment

চিকিৎসকের যৌন নির্যাতনের শিকার ২৯৯ নারী-কিশোরী। (BDC CRIME NEWS24

BDC CRIME NEWS24 চিকিৎসকের যৌন নির্যাতনের শিকার ২৯৯ নারী-কিশোরী: প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৫:৩৯  ফ্রান্সে সাবেক এক সার্জনের বিরুদ্ধে ২৯৯ রোগীক...