Saturday, January 18, 2025

আওয়ামী পুনর্বাসন আবারও শুরু- (পুলিশে ডিআইজি পদে পদোন্নতির তোড়জোড়) অগ্রাধিকার পাচ্ছেন রাতের ভোটের কারিগরা। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

আওয়ামী পুনর্বাসন আবারও শুরু-

(পুলিশে ডিআইজি পদে পদোন্নতির তোড়জোড়)

অগ্রাধিকার পাচ্ছেন রাতের ভোটের কারিগরা:

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২: ৫৮

পুলিশে নতুন করে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত ডিআইজি থেকে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পাচ্ছেন অন্তত ২৫ কর্মকর্তা। বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে ১৭, ১৮, ২০ ও ২১ ব্যাচের কর্মকর্তাদের। সবচেয়ে বেশি রাখা হচ্ছে ২০ ব্যাচের কর্মকর্তাদের। যাদের এ যাত্রায় বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে তারা বেশির ভাগই বিগত সরকারের সুবিধাভোগী। বিশেষ করে ২০তম ব্যাচের অনেকেই একাধিক জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) ছিলেন। তৎকালীন জেলার এসপি হিসেবে বিগত ২০১৮ সালের ‘রাতের ভোট’-এ প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখেন।

বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর চালিয়েছেন অত্যাচারের স্টিম রোলার। এমন কোনো জুলুম নেই, যা তারা করেননি। এসপি হওয়ার পর থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি পর্যন্ত যেখানে দায়িত্বে ছিলেন, বিরোধী দল দমনের নামে নির্মম নির্যাতন চালান এসব কর্মকর্তা। ২০২৪ সালের ‘ডামি ভোট’-এ পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছেন। পুরস্কার হিসেবে নিয়মিত পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি হয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। সর্বশেষ ৫ আগস্ট পটপরিবর্তন না হলে তারা এতদিনে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে যেতেন।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে অতিরিক্ত ডিআইজি থেকে ডিআইজি পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হয়। এক্ষেত্রে ১৮, ২০ ও ২১ ব্যাচকে বিবেচনায় নেওয়া হয়। এই তিন ব্যাচের মোট ৭৭ জন কর্মকর্তাকে ডিআইজি পদে পদোন্নতি দেওয়ার সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়। ওই কর্মকর্তাদের সবাই ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রতি অনুরক্ত। প্রায় সবাই ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নসহ বামপন্থি রাজনীতির সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে জড়িত ছিলেন। এদের মধ্যে অন্তত ৫০ জনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল।

২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) বৈঠকে ওইসব কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকার আইনি বাধ্যবাধকতার কথা চিন্তা করে পদোন্নতির ঘোষণা পিছিয়ে দেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর ওই ৭৭ জনকে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি দেওয়ার কথা ছিল।

তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পদোন্নতির সুপারিশপ্রাপ্ত এসব কর্মকর্তার কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে আওয়ামী লীগের একাধিক মন্ত্রী এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার ২০ কর্মকর্তার তালিকা পাঠায় আসাদুজ্জামান কামালের কাছে। এসএসবির বৈঠকে চূড়ান্ত করা ওই তালিকা কাটছাঁট করে তাদের পছন্দের কর্মকর্তাদের চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করা হয়। পরে পদোন্নতির বিষয়টি পিছিয়ে যায়।

গত বছরের জুলাই আন্দোলনের পর কিছুদিন চুপচাপ ছিলেন সাবেক সরকারের সুবিধাভোগী কর্মকর্তারা। ৭৭ কর্মকর্তার মধ্যে যারা চাকরিতে টিকে গেছেন, মাসখানেক আগে থেকে তারা সক্রিয় হয়ে ওঠেন। পুলিশ সদর দপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ে আনাগোনা বেড়ে যায় তাদের।

জানা গেছে, পুলিশের উচ্চপর্যায়ে এবং মন্ত্রণালয়ে তদবির করে সম্ভাব্য তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। সদর দপ্তর এবং মন্ত্রণালয় থেকে এরই মধ্যে গ্রিন সিগন্যালও পেয়েছেন সুবিধাভোগী ওইসব কর্মকর্তা।

জানা গেছে, ডিআইজি হিসেবে সম্ভাব্য তালিকায় থাকা ২০ ব্যাচের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি এবং গুরুতর। ২০১৮ সালের রাতের ভোটের কারিগরখ্যাত কর্মকর্তাদের মধ্যে আলমগীর কবির রাজশাহী, পাবনা ও রাঙামাটি-এই তিন জেলায় পুলিশ সুপার (এসপি) ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। হামিদুল আলম, মেহেরপুর ও দিনাজপুর জেলায় এসপি ছিলেন। শেরপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার এসপি ছিলেন মেহেদুল করিম। বরকত উল্লাহ খান ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলার এসপি। সম্ভাব্য তালিকায় আছেন বহুল আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা শামসুন্নাহার। যিনি এসপি ছিলেন গাজীপুর ও চাঁদপুর জেলায়।

গিয়াস উদ্দিন পঞ্চগড় জেলার এসপি, আনিসুর রহমান ছিলেন মেহেরপুর জেলার এসপি। দিনাজপুর জেলার এসপি ছিলেন সারোয়ার মুর্শিদ শামীম, তবারক উল্লাহ কুড়িগ্রাম জেলার এসপি, ফয়সাল মাহমুদ ঠাকুরগাঁও জেলায় এসপি ছিলেন।

সৈয়দ মুশফিকুর রহমান এসপি হিসেবে ছিলেন পটুয়াখালী জেলায়, ওয়ালিদ হোসেন পিরোজপুর জেলার এসপি, টুটুল চক্রবর্তী কুমিল্লা, শরীয়তপুর ও সিরাজগঞ্জ জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নিয়মিতভাবে পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি হওয়া সুলতানা নাজমা, রেবেকা সুলতানা, রুমানা এবং জেসমিনও আছেন পদোন্নতির সম্ভাব্য তালিকায়।

২১ ব্যাচের মুনতাসিরসহ ৪-৫ জনকেও ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিতে বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তারাও বিগত সরকারের সময়ে বিভিন্ন জেলায় এসপিসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। নিয়মিত পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন অতিরিক্ত ডিআইজি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এরই মধ্যে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পেতেন এসব কর্মকর্তা।

৫ আগস্টের পর এসব কর্মকর্তা ভোল পাল্টাতে শুরু করেন। নিজেদের আওয়ামী লীগবিরোধী হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। ক্ষেত্র বিশেষে শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে বিষোদাগারও করছেন। ছাত্রজীবনে ছাত্রদল করেছেন বলেও জাহির করছেন ভোল পাল্টানো এসব কর্মকর্তা। পরিবারের মধ্যে কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় বলেও অনেকে সরকারের বিভিন্ন মহলে তদবির করছেন। পদোন্নতির ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তেমন কিছু জানেন না বলে জানাচ্ছে একাধিক সূত্র। এক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীকে নানাভাবে ভুল বুঝিয়ে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি বাগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রায় সফলতার কাছাকাছি রয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ বাহারুল আলমের কাছে। সাবেক সরকারের সুবিধাভোগী এবং ২০১৮ সালের রাতের ভোটের কারিগর পুলিশ কর্মকর্তারা ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে, এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি তিনি। বলেছেন, এই মুহূর্তে পদোন্নতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। যে ম্যান্ডেট নিয়ে দায়িত্ব নিয়েছি, সে দায়িত্ব পালন করা জরুরি।

সূত্র: আমার দেশ 

No comments:

Post a Comment

১৫ জুলাই হামলায় কমিটির প্রতিবেদন- ঢাবিতে উস্কানি জুগিয়েছে ৭০ শিক্ষক ও ১২২ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 ১৫ জুলাই হামলায় কমিটির প্রতিবেদন- ঢাবিতে উস্কানি জুগিয়েছে ৭০ শিক্ষক ও ১২২ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী: প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৫, ২২: ৫...