Thursday, December 26, 2024

দলের ভেতরে-বাইরে তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত- একের পর এক পদ বাগিয়ে নেন সাবেক এমপি জাহির। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

দলের ভেতরে-বাইরে তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত-

একের পর এক পদ বাগিয়ে নেন সাবেক এমপি জাহির:

(জনপ্রতিনিধি বানিয়েছেন স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের * দল থেকে বহিষ্কার করেন সাবেক এক প্রতিমন্ত্রীকে)

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

হবিগঞ্জে একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাবশালী সংসদ-সদস্য (এমপি) ছিলেন মো. আবু জাহির। দলের ভেতর-বাইরে তার কথাই ছিল শেষ কথা। তার কথা খণ্ডানো কার সাধ্য ছিল? যে দু-একজন তার কথার ওপর কথা বলেছে, তাকেই যেতে হয়েছে কারাগারে। অনেককেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের গায়ে তকমা দেওয়া হয়েছে শিবির কিংবা ফ্রিডম পার্টির। ক্ষমতার দাপট এমন ছিল-বনিবনা না হওয়ায় একজন প্রতিমন্ত্রীকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারও করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ইউনিয়ন থেকে পৌরসভা, জেলা পরিষদ-সব পদেই বসিয়েছিলেন নিজের স্বজনদের। দলের গুরুত্বপূর্ণ সব পদ স্বজনদের দিয়েছিলেন। শুধুই কি নিজের, শ্বশুরবাড়ির লোকজনকেও বানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি। দিয়েছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ। এ নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই তৃণমূল থেকে জেলা পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে। এমনকি হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের কমিটির সিদ্ধান্তও তার বাসায় বসেই হতো। ৫ আগস্টের পর অবসান হয়েছে সে যুগের। তাসের ঘরের মতো ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে সাবেক সংসদ-সদস্য আবু জাহিরের সাম্রাজ্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, সংসদ-সদস্য হয়েই তিনি প্রথমে পুলিশ প্রটেকশন নেওয়া শুরু করেন। এজন্য তিনি নিজেকে হুমকি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তিকে জেলে ঢুকান। এর মাধ্যমেই মূলত একটি ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। তার গাড়ির আগে-পিছে পুলিশের গাড়ি না দিয়ে চাকরি করাই দায় ছিল কর্মকর্তাদের। সবাইকে বাগে এনে একের পর এক নিজের অধীনে নিতে থাকেন। নিজে সংসদ-সদস্য, স্ত্রীকে বানিয়েছিলেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি, পরবর্তী সময়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বানান, ভাগিনা, ভাতিজা, ভাই, স্ত্রীর ভাইদের জনপ্রতিনিধিসহ দলের এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের পদ দিয়েছেন। কেউ তার কথার বাইরে গেলেই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন। দলের ত্যাগী নেতাদের বঞ্চিত করেছেন। এ কারণে ত্যাগী নেতারা তার প্রতি ভীষণ ক্ষুব্ধ ছিলেন। অনেকেই মানসম্মান হারানোর ভয়ে কিছু বলতেন না।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সংসদ-সদস্য হয়েই আবু জাহির বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি হন। পরবর্তী সময়ে সরকার সংসদ-সদস্যদের এ পদে না থাকতে প্রজ্ঞাপন জারি করলে তিনি এসব পদে স্ত্রী আলেয়া আক্তারকে বসিয়ে দেন। এরপর তাকে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করেন। সবশেষ তাকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে বসান। ইউপি চেয়ারম্যান করেন চাচাতো ভাই আব্দুর রহিমকে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করেন ভাতিজা ফয়জুর রহমান রবিনকে। পৌরমেয়র করেন চাচাতো বোনের ছেলে মো. আতাউর রহমান সেলিমকে। নিজের ছোট ভাই বদরুল আলমকে করেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক। কাউন্সিল ছাড়াই কেন্দ্রীয় নেতাদের হাত করে নিজে হন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। বনিবনা না হওয়ায় ২০১৮ সালে তৎকালীন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও তার ভাই অ্যাডভোকেট ফজলে আলীকে জেলা আওয়ামী লীগের সভায় দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করেন। তার অনুগত সংবাদকর্মীর মাধ্যমে এ খবর গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পৌঁছান। তা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ছাপা হলে পরদিন তিনি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারও করেন। নিজের একান্ত অনুগত লোক হিসাবে পরিচিত ঠিকাদার মিজানুর রহমান শামীমকে করেন হবিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোয়ও বসিয়েছিলেন নিজের একান্ত অনুগতদের। জেলাজুড়ে যেন এক রামরাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তিনি যাকে চাইতেন, তাকেই বানাতেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদক। এমনকি তার থাবা থেকে বাদ যায়নি প্রেস ক্লাবও। প্রতিবছর ডিসেম্বর এলেই তার বাসায় বসেই করা হতো প্রেস ক্লাবের কমিটি।

সূত্র: যুগান্তর 

No comments:

Post a Comment

এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক: প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২৭ বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের অভ্যন্তরে ২০০৯ ...