Sunday, December 15, 2024

বেক্সিমকোর জন্য ১৮০ কোটি টাকা ছাড় করছে জনতা ব্যাংক। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

বেক্সিমকোর জন্য ১৮০ কোটি টাকা ছাড় করছে জনতা ব্যাংক:

 প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৫

- শ্রমিকদের বেতনের দায় নিচ্ছে সরকার

- জনতা ব্যাংকের সাড়ে ২৪ হাজার ঋণের খেলাপি বেক্সিমকো

বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকদের বেতনের দায় নিচ্ছে সরকার। এই দায়ের অংশ হিসেবে জনতা ব্যাংককে বেক্সিমকো শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন বাবদ ১৮০ কোটি টাকা ছাড় করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চরম আর্থিক সঙ্কটে থাকা রাষ্ট্রীয় এই ব্যাংকের পক্ষে এই পরিমাণ অর্থ ছাড় করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। কারণ অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে, পুরো অর্থ জনতাকেই প্রদান করতে হবে। ভবিষ্যতে এই অর্থ জনতা ব্যাংক সরকারের কছে দাবি করতেও পারবে না। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

উল্লেখ্য, এই গ্রুপের কাছে জনতা ব্যাংকের ঋণ পাওনা রয়েছে সাড়ে ২৪ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ইতোমধ্যে বেক্সিমকো ব্যাংকের কাছে ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গেল সপ্তাহে বেক্সিমকো গ্রুপের দায়দেনা বিষয়ে সচিবালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম, শ্রম উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেনসহ জনতা ব্যাংক ও অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বেক্সিমকো শিল্পাঞ্চলে থাকা শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন বাবদ ১৮০ কোটি টাকা ছাড় করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। এ সময়ে জনতা ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলার চেষ্টা করা হয়, ইতোমধ্যে বেক্সিমকোর কাছে জনতা ব্যাংকের পাওয়া রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোট টাকা। তারা এই ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে আবার নতুন করে এই গ্রুপকে ১৮০ কোটি টাকা দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এই সময় দুই উপদেষ্টার পক্ষ থেকে বলা হয়, শ্রমিকদের বেতন দেয়া সম্ভব না হলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে। যা সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ করবে, তাই বেতনের অর্থ জনতা ব্যাংককেই প্রদান করতেই হবে।

সূত্র জানায়, এরপর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পক্ষ থেকে গত সপ্তাহে অর্থ প্রদানের বিষয়ে মতামত চেয়ে অর্থ বিভাগের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। এই চিঠির জবাবে অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের পক্ষ থেকে গত ১০ ডিসেম্বর মতামত দিয়ে বলা হয়, ‘বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় জনতা ব্যাংক পিএলসি কর্তৃক বেক্সিমকো গ্রুপের অনুকূলে ১৮০ কোটি টাকা ঋণ প্রদানে অর্থ বিভাগের অনাপত্তি দুই শর্তে নির্দেশক্রমে অবহিত করা হলো। এর একটি শর্ত হলো- ক. ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১-এর ২৭কক ও ২৬খ নং ধারা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে জনতা ব্যাংকের সম্পাদিত এমওইউর শর্ত ব্যত্যয় হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বসম্মতি গ্রহণ করতে হবে। এবং খ. এই ঋণের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগের কোনো দায় তৈরি হবে না এবং এর বিপরীতে সরকার হতে কোনো ধরনের অর্থসহায়তা জনতা ব্যাংক ভবিষ্যতে দাবি করতে পারবে না।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে জনতা ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, এমনিতে আমরা চরম অর্থসঙ্কটে ভুগছি। কয়েক বছর ধরে আমরা সঞ্চিতির ঘাটতিতে ভুগছি। বিধিবদ্ধ অর্থ রাখতে না পারার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের অর্থও জরিমানা করছে। এই গ্রুপের কাছে আমাদের পাওয়ানাই রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। এরপর নতুন করে আরো ১৮০ কোটি ঋণ দেয়া আমাদের পক্ষে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ালেও সরকারের নির্দেশ মেনে এই অর্থ আমাদের ছাড় করতে হচ্ছে। কিন্তু এই অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

জানা গেছে, ২০২৪ সালে প্রচুর পরিমাণে ব্যাংকটি থেকে ঋণ নেয় বেক্সিমকো গ্রুপ। ২০২১ সালে জনতা ব্যাংকে বেক্সিমকোর ঋণ ছিল ১৪ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা, এখন যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৪৮২ কোটি টাকায়। এই ঋণের বেশির ভাগই খেলাপি। এখন আবার নতুন করে শ্রমিকদের বেতন দেয়ার জন্য জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ করছে গ্রুপটি। অথচ হাজার কোটি টাকার বেশির রফতানি আয় দেশে ফেরত আনছে না বেক্সিমকো।

সূত্র: ডেইলি নয়াদিগন্ত 

No comments:

Post a Comment

গুমের পর চালানো হতো ১৭ ধরনের নির্যাতন। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 গুমের পর চালানো হতো ১৭ ধরনের নির্যাতন: (ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নির্যাতনের কথা জানালেও তা উপেক্ষা) প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৫ দেশ...