Wednesday, November 6, 2024

শেখ পরিবারের নামেই ছিল খুলনার অনেক প্রতিষ্ঠান।

BDC CRIME NEWS24

শেখ পরিবারের নামেই ছিল খুলনার অনেক প্রতিষ্ঠান।

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ২১:৪৬

শুধু প্রতিষ্ঠান নয়, স্থান বা মোড়ের নামও পরিবর্তন করা হয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। নতুনের পাশাপাশি পুরাতন প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করেও করা হয় শেখ পরিবারের নামে।

খুলনার জিরো পয়েন্ট এবং কেডিএ’র ময়ূরি আবাসিক এলাকার মধ্যবর্তী একটি মোড়ের নাম ছিল খালাসির মোড়। নগরীর গোবরচাকা এলাকার আব্দুল আজিজ খালাসির বেশ জমিজমা ছিল সেখানে।

খালাসি বাড়ির জমি আছে বলেই মোড়টির নামকরণ হয়ে যায় ‘খালাসির মোড়’। কিন্তু আব্দুল আজিজ খালাসির মৃত্যুর পর তার সন্তানরা শোকাহত হওয়ায় ওই জমির কাগজপত্র নিয়ে বেশকিছুদিন ছিলেন নীরব। এই নীরবতার সুযোগেই সেই সম্পত্তি দখলের লক্ষ্যে একটি জালিয়াতি চক্র আওয়ামী লীগ আমলে জাল কাগজপত্র তৈরি করে হঠাৎ একদিন সাইনবোর্ড টানিয়ে নামকরণ করে ‘জয়বাংলা মোড়’। 

খুলনায় আওয়ামী লীগের আমলে সর্বশেষ প্রতিষ্ঠিত মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটিও করা হয় পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের নামে।

তবে খুলনার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই রয়েছে তার চাচার নামে।

নতুন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিশেষায়িত হাসপাতালটির নামকরণ করা হয় শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল নামে। যেটি গত ৩ নভেম্বরের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিবর্তন করে খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতাল নামকরণ করে।

এক সময় খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামের নাম ছিল বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মতিউর রহমান বিভাগীয় স্টেডিয়াম।

আওয়ামী লীগের আমলে সেটির নামও করা হয় শহীদ শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম। গত ৫ আগস্টের পর ওই স্টেডিয়ামের নামকরণ পূর্বের নামে করার দাবিতে মানব বন্ধন করে একটি নাগরিক সংগঠন।

খুলনার একজন আলোচিত জেলা প্রশাসকের আমলে সার্কিট হাউজে করা হয়েছিল টেনিস কোর্ট। নামকরণ করা হয় শেখ পরিবারের আর এক সদস্য শেখ রাসেলের নামে। এমনিভাবে রূপসা নদীর তীরে করা ইকোপার্কও করা হয় শেখ রাসেল ইকোপার্ক নামে।

শের-এ-বাংলা রোডের আলোচিত শেখ বাড়ির পাশেই গড়ে উঠেছিল একটি হাফেজী মাদরাসা। সেটিরও নামকরণ করা হয় শহীদ শেখ আবু নাসের হাফেজিয়া মাদরাসা নামে।

সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত বঞ্চিত শিশু-কিশোরদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খুলনায় ছিল দু’টি প্রতিষ্ঠান। একটি নগরীর গল্লামারীতে অপরটি বটিয়াঘাটার মল্লিকের মোড়ে অবস্থিত। ওই দু’টি প্রতিষ্ঠানের নামও করা হয় ‘শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র’ নামে। যার একটি বালক অপরটি বালিকা। ওই দু’টি প্রতিষ্ঠানের নামও সম্প্রতি পরিবর্তন করে করা হয়, ‘সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র’। 

সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করায় ইতোমধ্যে নতুন সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। তবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও রয়েছে বঙ্গমাতা হল। তাছাড়া খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগ আমলে শেখ রাসেল ল্যাব করা হয়েছিল। সেগুলো এখনও বিদ্যমান।

এভাবে নতুন প্রতিষ্ঠানের নামকরনের পাশাপাশি অনেক প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করেও করা হয়েছিল শেখ পরিবারের নামে। যেগুলো অনেকের হাসির খোরাকও যুগিয়েছে। এমন একটি প্রতিষ্ঠান নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার আল ফারুক সোসাইটি। ছিল আল ফারুক সোসাইটি দাখিল মাদরাসা। যেটি জামায়াতের ট্রাস্টের সম্পত্তি। কিন্তু সেটি দখল করে নাম করা হয় শহীদ শেখ আবু নাসের দাখিল মাদরাসা। সেখানে আরও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় শেখ রিজিয়া নাসের হাফেজিয়া মাদরাসা। 

এছাড়া পার্শ্ববর্তী খুলনা টেকনিক্যাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছিল জয়বাংলা কলেজ। শেখপাড়ার আগাখান স্কুলের নামও করা হয় শহীদ শেখ আবু নাসের হাইস্কুল। এমনকি খুলনা প্রেস ক্লাব ব্যাংকুয়েট হলের নামও করা হয়েছিল আবু নাসেরের নামে। যদিও সেটি এখন পূর্বের নামেই পরিচিতি পেয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলকভাবে করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু কর্নার।

নামকরণের এমন সংস্কৃতিকে ভিন্নভাবে দেখছেন খুলনার নাগরিক সমাজের নেতারা। এ প্রসঙ্গে সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাক খুলনার সভাপতি এড. কুদরত-ই-খুদা বলেন, এটি একটি অপসংস্কৃতি। বরং এতে রাজনীতিকে আরও কলুষিত করা হয়। এ সংস্কৃতি বন্ধ হওয়া উচিত বলেও তিনি মনে করেন।

সূত্র: কালের কণ্ঠ

No comments:

Post a Comment

এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক: প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২৭ বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের অভ্যন্তরে ২০০৯ ...