Monday, November 18, 2024

অবৈধ সম্পদের পাহাড় দেশ টিভির এমডির। ((BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24

অবৈধ সম্পদের পাহাড় দেশ টিভির এমডির:

প্রকাশ: সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

হত্যাচেষ্টা মামলায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরিফ হাসানের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর বিমানবন্দর থানা এলাকায় সজীব নামে এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচার ও বিনিয়োগ, অবৈধ আয়, ব্যাংক ঋণ নিয়ে আত্মসাৎসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

গত শনিবার বিদেশ যাওয়ার পথে আরিফ হাসানকে আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে খবর পেয়ে বিমানবন্দর থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। মামলা সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই উত্তরার স্কলাস্টিকা স্কুলের সামনে গুলিবিদ্ধ হন সজীব। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়।


এ ঘটনায় সজীবের বাবা বিমানবন্দর থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

আরিফের ঋণ জালিয়াতি : সম্প্রতি আরিফ হাসানের অবৈধ আয়, ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের অনুসন্ধান করেছে দুদকের সহকারী পরিচালক শফি উল্লাহ। অনুসন্ধানে বলা হয়, অভিযুক্ত আরিফ হাসান দেশ টিভির এমডির আড়ালে অবৈধ উপায়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করে সিঙ্গাপুর ও কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে পাচারের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেছেন। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে শুধু কানাডায় ৫০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

পাচার করা টাকায় কানাডায় গড়ে তুলেছেন আলিশান বিলাসবহুল বাড়ি। অর্থ পাচার তদন্তকালে দুদক ম্যানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ১৪-এর ২ ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭ সংশোধিত ২০১৯-এর ১৮ বিধি অনুযায়ী অভিযুক্ত আরিফ হাসানের ১৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আবেদন করেছে। যেসব ব্যাংক হিসেবে কোটি কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধ না করে খুলে দিতে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করলে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি অভিযুক্ত আরিফের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চায় সুপ্রিম কোর্ট। দুদকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত আরিফ হাসান ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সন্দেহজনকভাবে ছয়বার তার পাসপোর্ট পরিবর্তন করেছেন।

ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এ পর্যন্ত তিনি ১২৮ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৯৮৮ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন যা তার আয়ের সঙ্গে মিল নেই। বিএফআইইউর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা জানান, ন্যাশনাল ব্যাংক মহাখালী শাখায় আরিফের মালিকাধীন হাসান টেলিকমের নামে ২৭৫ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি হয়েছে। ডাইরেক্ট হু হোম প্রকল্পের আওতায় ৪৭৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ওয়ার্ক পারমিটের বিপরীতে ন্যাশনাল ব্যাংকের মহাখালী শাখায় ঋণের আবেদন করা হয়। ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর ব্যাংকের পর্ষদ সভায় হাসান টেলিকমের অনুকূলে ২৭৫ কোটি টাকার ৫ বছর মেয়াদি ওভারড্রাফট (ওডি) ঋণ অনুমোদন করে। ২৯ নভেম্বর আরিফের ব্যাংক হিসাবে ১০০ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়। পরে পুরো টাকা ১৯টি চেকের মাধ্যমে তুলে নেন আরিফ। ২ ও ৩ ডিসেম্বর যথাক্রমে ১০০ কোটি ও ৭৫ কোটি টাকা একইভাবে আরিফের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। পরে চেকের মাধ্যমে ওই টাকাও তুলে নেন আরিফ। দুদক বলছে, আরিফের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার ভি-৮ গাড়িটি বাংলাদেশে খুব বেশি ব্যবহার হয় না। এর আনুমানিক মূল্য ৫ কোটি টাকা। তার সম্পদের অনুসন্ধান শুরু হলে গাড়িটি লুকিয়ে ফেলেন আরিফ। গাড়িটির নম্বরের সূত্র ধরে দুদক জানতে পেরেছে নিজের টাকায় কেনা হলেও অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করেছেন আরিফ। দুদক জানায়, জালিয়াতি করা টাকায় আরিফ হাসান নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। আরিফ ও তার বাবার নামে গুলশানে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া দেশ টিভিতে বিনিয়োগ ৭৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা, দেশ এন্টারটেইনমেন্টে বিনিয়োগ ৬ লাখ টাকা ও হাসান টেলিকমে বিনিয়োগ ৮ লাখ টাকা। পাশাপাশি ৫ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের জমা এবং হাতে নগদ বাবদ ১২০ কোটি ৬৮ লাখ ৭৪ হাজার ৫৩৮ টাকা রয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুরই বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি আরিফ হাসান।

টরন্টোয় আরিফের বাড়ি কেনার কাহিনি : আরিফ হাসান কানাডার অভিজাত এলাকায় যে বাড়িটি কিনেছেন তা বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে কেনা বলে দুদক জানিয়েছে। বাড়ি কেনার নথি থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ৮ মে থেকে ২০১৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আরিফ হাসানের কেনা বাড়িটি হাত বদল হয় চারবার। সর্বশেষ হাত বদলে বাড়ির মালিক হন আরিফ। নথির তথ্য অনুযায়ী, বৃহত্তর টরন্টোর নর্থ ইয়র্কের ৮২ হলিউড এভিনিউর এ বাড়িটি গত বছরের সেপ্টেম্বরে আরিফ হাসান টরন্টোয় উপস্থিত থেকে কেনেন। পরে পুরনো বাড়ি সংস্কার করে নতুন রূপ দেন। সংস্কার করে বাড়িটির নতুন রূপ দিতে আরিফ হাসান খরচ করেছেন ১ মিলিয়ন কানাডীয় ডলার। বাড়ি বেচাকেনার লিস্টিংয়ের (নথিভুক্ত) বাইরে প্রাইভেট ডিলিংয়ের (ব্যক্তিগত যোগাযোগ) মাধ্যমে নগদ অর্থে বাড়িটি কেনা হয়েছে।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

No comments:

Post a Comment

এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক। (BDC CRIME NEWS24)

BDC CRIME NEWS24 এনএসআইয়ে ‘র’ নেটওয়ার্ক: প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ২৭ বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের অভ্যন্তরে ২০০৯ ...