BDC CRIME NEWS24
আন্দোলনে অস্ত্রধারী সেই টিপু-ইকবাল ঘুরছেন প্রকাশ্যে, হদিস পায়না পুলিশ!
প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৯ পিএম আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৯ পিএম
মোস্তফা কামাল টিপু ( সাদা রঙের টুপি পরা) ও ইকবাল হোসেন (সবুজ রঙের টুপি পরা)
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণকারী দুই অস্ত্রধারী প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছেন। কিন্তু পুলিশ তাদের হদিস পাচ্ছে না। এই দুই অস্ত্রধারী হলেন- আগ্রাবাদ নাজিরপাড়া মগপুকুরপাড় এলাকার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোস্তফা কামাল টিপু এবং তার ঘনিষ্ট সহযোগী একই এলাকার দাইয়্যেপাড়ার কথিত যুবলীগ নেতা ইকবাল হোসেন।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, কিছুদিন ধরে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় অনেকটা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছেন ওই দুই অস্ত্রধারী। গত ১৮ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের পেছনে গলিতে ভান্ডারি হোটেলের পাশে ঠিকাদার ট্রেড ইউনিয়ন কার্যালয়ে দেখা গেছে ইকবাল হোসেনকে। এ সময় তার পরনে ছিল নীল রঙের প্যান্ট এবং জলপাই রঙের গেঞ্জি। এর আগের দিন একই এলাকায় দেখা গেছে মোস্তফা কামাল টিপুকে। তবে দুজনই দাড়ি ছেঁটে ছোট করে ফেলেছেন।
এই দুই অস্ত্রধারীর বিষয়ে নগরের ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক বলেন, ‘মোস্তফা কামাল টিপু ও ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে অস্ত্রবাজীর মামলা আছে। দুজনের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। তাদের আমরা খুঁজছি। গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।’
টিপুর বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও অস্ত্রবাজীর অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান ওসি।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৪ আগস্ট দুপুরে নগরের নিউমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ করেন মোস্তফা কামাল টিপু ও ইকবাল হোসেন। গুলিবর্ষণের আগে টিপুর মাথায় সাদা এবং ইকবালের মাথায় ছিল হলুদ রঙের টুপি। এ সময় ইকবালের হাতের মুঠোয় ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। আগ্নেয়াস্ত্রের গুলির ম্যাগজিন ছিল মোস্তফা কামাল টিপুর হাতে। আর তাদের এমন অবস্থার ছবি ও ভিডিও পরের দিন গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশিত হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, কিশোর গ্যাং লিডার মোস্তফা কামাল টিপু মূলত ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চসিক ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করা স্থানীয় নজরুল ইসলাম বাহাদুরের হয়ে কাজ করতেন। বাহাদুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠেন টিপু। মতের অমিল দেখা দিলেই টিপু যে কারো ওপর হামলে পড়েন। তার বিরুদ্ধে ডাবলমুরিংসহ বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, মারামারি ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। ২০১৯ সালে আগ্রাবাদে যুবলীগ কর্মী জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রকাশ মারুফ চৌধুরী হত্যা এবং ২০২১ জানুয়ারিতে সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনায় খুন হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা আজগর আলী বাবুল হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি মোস্তফা টিপু। এই টিপু ও ইকবাল জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা, অস্ত্রবাজীর অভিযোগে নগরের কোতোয়ালি, চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ থানায় দায়ের করা একাধিক মামলার আসামি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে খোরশেদ নামে এক অপরাধী মারা যাওয়ার পর তার সাম্রারাজ্যের হাল ধরেন মোস্তফা কামাল টিপু ও ইকবাল। আগ্রাবাদ এলাকায় নির্মাণাধীন ভবন, ফুটপাতের হকার, শিপিং অফিসে জাহাজের পরিত্যক্ত তেল সরবরাহ, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি, পিডিবি ও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল বিপণন প্রতিষ্ঠানের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও ফুটপাত দখল নিয়ে সাবেক কাউন্সিলর সিএমপির তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী আব্দুল কাদের ওরফে মাছ কাদের ও মোস্তফা কামাল টিপুর মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই থাকতো। পরে মোস্তফা কামাল টিপু ও ইকবাল আলাদা গ্রুপ তৈরি করেন।
তৃতীয় ধাপের প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ স্থগিততৃতীয় ধাপের প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত
স্থানীয়রা আরও জানান, ৫ আগস্টের পর অস্ত্রধারী এই দুই ‘সন্ত্রাসী’আত্মগোপনে চলে যান। সম্প্রতি তারা আবার আগ্রাবাদ এলাকায় ফিরে আসেন। এখনো তারা এলাকায় চাঁদাবাজি করছেন। আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের পেছনে বিদ্যুৎ ভবনের কথিত ঠিকাদার সমিতির অফিসকে আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে দুর্ধর্ষ এই দুই অস্ত্রধারী আগ্রাবাদ এলাকায় বীরদর্পে ঘোরাফেরা করায় স্থানীয় ব্যবসায়ী, হকারদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
কাজের জন্য নিজেকে ১০-এ কত দিলেন আসিফ নজরুলকাজের জন্য নিজেকে ১০-এ কত দিলেন আসিফ নজরুল
গত ৬ নভেম্বর ১১টা ৪ মিনিটে “গুরা বাহ” নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ দুই অস্ত্রধারীর ছবি যুক্ত করে একটি স্টাটাস দেওয়া হয়। এতে লেখা হয়েছে “সাদা টুপি ওয়ালা অস্ত্রধারীর নাম - মোস্তফা কামাল টিপু। মাফিয়া লিডার ছিল- কখনো নওফেল, কখনো নাছির, কখনো এমপি লতিফ তবে শেষ পর্যায়ে নওফেলের সাথে ছিলো দারুন সখ্যতা। চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এভাবেই প্রকাশ্যে ম্যাগাজিন খালি অতঃপর লোড করছে। চট্টগ্রাম মুরাদপুর, ষোলশহর, নিউমার্কেট এলাকায় ছাত্র হত্যাকাণ্ডে লীগকে অস্ত্রের যোগান দেয়াসহ নিজেও অস্ত্রের খেল দেখিয়ে ছাত্রদের গুলি করতো। বি:দ্র: টিপু চট্টগ্রাম শহরে অস্ত্রবাজীর জন্য খুবই প্রসিদ্ধ। অনেক অবৈধ অস্ত্রের কালেকশন রয়েছে টিপুর কাছে। সে কিন্তু পাক্কা আশেকে রাসুল দাবিদার আবার মাজার দিয়েও নানা কুকীর্তি রয়েছে।বাসার ঠিকানা - নাজিরপুল, ২৮ নং ওয়ার্ড, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম।”
সূত্র: দেশ রূপান্তর
No comments:
Post a Comment